জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা: রাস্তায় মরছে বেওয়ারিশ গরু!
গরু নিয়ে প্রতিদিনই নানান ধরণের অনেক বিচিত্র খবর প্রতিদিন ভারত ও বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়। এসব ঘটনার বিচিত্রতা খবর হিসেবে বহু মানুষের হাসির খোরাক জোগালেও খোদ ভারতের লাখো কৃষক চোখের পানিতে ভাসছেন গরু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞার কারণে। নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গরু জবাই করার দায়ে বা এমন গুজব ছড়িয়ে এখন পর্যন্ত কয়েকশ মানুষকে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাকর্মীরা।
এছাড়া ঋণের বোঝা বইতে না পেরে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা ভারতে এখন ডালভাত ব্যাপার। এর সাথে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যোগ হয়েছে মনুষ্য আরোপিত দুর্যোগ। অর্থাৎ, গরু জবাইয়ে নিষেধজ্ঞা। অনেক কৃষক আগে গরু পোষতেন, এবং চাষের মৌসুমে সেই গরু দিয়ে চাষের কাজ সেরে বাজারে বিক্রি করে দিতেন। ঘরে রাখতেন গাই গরুকে। যাতে আবারও সেটি থেকে বাচ্চা পেতে পারেন।
বাড়তি গরু ঘরে রেখে খাওয়ানোর যে খরচ সেটি থেকে কৃষকরা বেঁচে যেতেন। আবারও চাষের মৌসুম শুরু হলে প্রয়োজনে নতুন ষাঁড় কিনে নিতেন। অথবা ঘরে থাকা বাছুররা বড় হয়ে উঠলে সেগুলো দিয়ে চাষের কাজ করতেন।
কিন্তু গরু বিক্রি, বিশেষ করে জবাইয়ের উদ্দেশ্য, বিভিন্ন রাজ্যে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পর এখন বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। এখন চাষ শেষে গরুগুলোকে গোয়ালে রেখে মাসের পর মাস খাওয়াতে হচ্ছে তাদের।
যেসব এলাকায় খরা দেখা দিচ্ছে সেসব এলাকার কৃষকরা ভালো মতো ফসল না পাওয়ায় ঘরে থাকা গরুগুলোকে খাবার দিতে সক্ষম হচ্ছেন না। এমনকি নিজের সন্তানদের জন্যই তিন বেলা খাবার জোগাড় কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য। গরু বিক্রি করতে পারলে এক দিকে যেমন সংসার চালানোর খরচ আসতো, তেমনি গরুর জন্য খাবার জোগাড়ের চিন্তা করতে হতো না।
উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে রাস্তাঘাটে বেওয়ারিশ গরুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভারতীয় পত্রিকা দ্য ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেওয়ারিশ গরুর পাল মিলে অন্য কৃষকের ফসলের ক্ষেতে হানা দিয়ে নষ্ট করার ঘটনা এতই বেড়েছে যে, গ্রামে গ্রামে পালা করে রাতভর ফসল পাহারা দিতে হচ্ছে।
বেওয়ারিশ গরুদের অনেকে রাস্তায় মারা যাচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে স্থানীয়দের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব মৃত গরুকে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে মাটিচাপা দেয়ার জন্য সরকারকে টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ভারত এবার প্রথমবারের মতো মৃত গরু সৎকারের জন্য শ্মশান তৈরি হবে।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপাল পৌরসভার মেয়র অলোক শর্মা এমন ষোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনো গরুর অস্বাভাবিক বা অসময়ে মৃত্যু হলে ওই শ্মশানে দাহ করা হবে। এটিই হবে ভারতের গরু সৎকারের জন্য প্রথম শ্মশান।
গরু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারত অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে। বিশেষ করে দেউলিয়া হচ্ছেন লাখো কৃষক, যারা গরু পালনের মাধ্যমে কৃষি কাজ ও সংসার চালাতেন।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: