‘বুলবুল ভাই ছিলেন আমাদের সঙ্গীত জগতের মহাজন’

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০৩:১৮ পিএম

অনেকদিন ধরেই হার্টের অসুখে ভুগছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। অবশেষে হার্ট অ্যাটাকেই জীবনের অবসান ঘটলো তার। আজ মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গন শোকে কাতর।

রাজধানীর আফতাব নগরে তার বাসভবনটি শোকের চাদরে ঢাকা পড়েছে। একমাত্র পুত্র সামির বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। তার চোখে জল নেই। কারও সান্তনারও প্রয়োজন পড়ছে না। এই কিংবদন্তির চলে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বাসায় ছুটে যান দেশবরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও শোবিজ অঙ্গনের অনেকে।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও বন্ধু কুমার বিশ্বজিৎ এবং এন্ড্রু কিশোরের চোখের কোণে জল নিয়ে নির্বাক হয়ে আছেন। পাশেই রয়েছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের পুত্র সামির আহমেদ মুন। তাকে বুকে জড়িয়ে এন্ড্রু কিশোর ও কুমার বিশ্বজিত সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু সামির নিজেকে শক্ত করে বলছেন আমার কিছু হয় নি। আমি ঠিক আছি। আমি মনোবল হারাই নি। আমি ভেঙ্গে পরলে চলবে না। আমি শক্ত আছি।

কুমার বিশ্বজিৎ বিডি২৪লাইভকে বলেন, গত দুই বছর ধরে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কি যেন একটা গ্রাস করেছে। এই সময়টাতে আমরা আমাদের অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি। অনেকেই আমাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আজকে বুলবুল ভাইও আমাদের ছেড়ে চলে গিয়ে আমাদেরকে একা করে দিয়ে গেলেন। বুলবুল ভাই ছিলেন আমাদের সঙ্গীত জগতের মহাজন। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির হার্ট ছিলেন তিনি। কিন্তু আজ তিনি নেই। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকে উনার সঙ্গে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেকেছি কতশত। আর কাজের জায়গায় আমরা সবসময় আলোচনা করতাম কিভাবে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে সামনে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। উনি সবসময় একটা কথাই বলতো আমাদের ইন্ডাস্ট্রি কোনদিকে যাচ্ছে! কি হবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির। তিনি সবসময়ই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে ভাবতেন। উনার তো বয়সও হয় নি তেমন, এখনই আমাদের ছেড়ে চলে যেতে হলো! উনার অনেক কিছু করে যাওয়ার ছিল। কিন্তু করে যেতে পারেন নি।

উল্লেখ্য, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭০ সালের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সঙ্গীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশের গান তৈরি করেছেন তিনি। বুলবুল ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপাসহ বাংলাদেশি জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।

সঙ্গীতে অবদানের জন্য বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কার-সহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পান।

বিডি২৪লাইভ/আইএন/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: