কৃষিজমিতে ৪ টন ওজনের সোনার মুখোশ!

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:১৫ পিএম

একটি আখের খেতে ট্রাক্টর চালাচ্ছিলেন এক কৃষিজীবী। হঠাৎ ধাতব এক শব্দ। এরপর মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় চার টনের আস্ত সোনার মুখোশ। ফলে প্রকাশ্যে আসে মালাগানা সংস্কৃতির বেশ কিছু অজানা কথা।

ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯২ সালের পূর্বে কলম্বিয়ার কাকা উপত্যকায়। সোনার মুখোশটি পাওয়ার পর সেটি লুকিয়ে রাখেন ওই কৃষক। কিন্তু এতো বড় বিষয় চাপা থাকেনি বেশিদিন। শুধুমাত্র একটা সোনার মুখোশকে কেন্দ্র করে খুন, লুটপাট- একের পর এক ঘটনায় সরগরম হয়ে ওঠে ওই এলাকা।

১৯৯২ সালে ওই একই এলাকা থেকে মালাগানা সংস্কৃতির বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধার হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটা সোনার চিমটে, যা ভ্রূ ঠিক করতে ব্যবহার করতেন প্রাচীনকালের অভিজাত ব্যক্তিরা। প্রত্নস্থল থেকে সোনা লুটের সময় ১৯৯৩ সালে এক ব্যক্তি এখানে খুন হন।

প্রায় ৫০০ বর্গমিটার বিস্তৃত ছিল এই চাষের জমি, যা পরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের খ্যাতি পায়। এরপর প্রায় ৫০০ বর্গমিটার বিস্তৃত ওই জমিতে শুরু হয় খননকাজ।

প্রত্নতাত্তিকরা পরবর্তীতে সেখানে আবিষ্কার করেন ইয়ামাস, ইয়োতোকো, সোনসো ও মালাগানা সংস্কৃতি। এটি ৩০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৩০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ বছর পর্যন্ত স্থায়িত্ব ছিল এই সভ্যতার। এই সংস্কৃতিকে বলা হত কালিমা সংস্কৃতি।

চার টনের মুখোশ মেলায় শত শত সমাধি ধ্বংস করা হয়। আরও বেশি সোনা খুঁজে পাওয়ার লোভে লুট হতেই থাকে। ধীরে ধীরে প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে ওই সংস্কৃতির নানা অজানা তথ্য সামনে আসে। স্থানীয় লুটেরাদের হাত থেকে ওই স্থানটি রক্ষা করতে সচেষ্ট হন তাঁরা।

এছাড়া প্রায় ১৫০টি মুখোশ ও গয়না মিলেছিল এই খননের ফলে। মিলেছিল প্রায় তত্কালীন আড়াই কোটি টাকা মূল্যের মুদ্রাও। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার মুসেও দেল ওরো অর্থাৎ সোনার সংগ্রহশালায় রাখা রয়েছে এই প্রত্নসামগ্রীগুলো।

ইতিহাসবিদরা জানান, মৃত্যুর পর সমাধিস্থ করার সময় এই মারাত্মক বড় মুখোশ পরানো হত সেই সময়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের। এদের মধ্যে পুরোহিত ও অভিজাত ব্যক্তিরাও ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: