ফেসবুকে এলিনার ভয়াবহ প্রতারণা!
পটুয়াখালির ছেলে সোহেল। কাজ করেন একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে। অবসর সময়ে বিশেষ করে রাতে বেশিরভাগ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেই কাটে সোহেলের।
হঠাৎ একদিন সোহেলের কাছে ‘এলিনা’ নামের একটা আইডি (ফেসবুক অ্যাকাউন্ট) থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। আইডিতে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সোহেল বুঝতে পারে এটা আমেরিকার কারও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
সোহেল দুইদিন পর আইডির রিকোয়েস্টটা একসেপ্ট করে। পরে ওই আইডির থেকে ইংরেজিতে সোহেলের কাছে মেসেজ আছে ‘বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ’।
এরপর দিন যত বাড়তে থাকে সোহেলের সাথে ওই আইডির ‘এলিনা’ তত বেশি মেসেজ আদান প্রদান শুরু করে। একপর্যায়ে সোহেল এলিনাকে তার দেশে আশার আমন্ত্রণ জানায়।
এলিনা জানায় সে আমেরিকার একটি পুলিশ টিমে কাজ করে। এবং সময় পেলে সে অবশ্যই বাংলাদেশে ঘুরতে আসবে। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন এলিনা জানায় সে শীঘ্রই বাংলাদেশে আসছে। খুবই খুশি হয় সোহেল।
সোহেলকে এলিনা জানায় সে বাংলাদেশে আসলে সোহেলকে আমেরিকা নিয়ে যাবে। এরপর হঠাৎ একদিন এলিনা জানায় তার টিম একদল সন্ত্রাসীকে মেরে ফেলেছে এবং তারা ব্যাগ ভর্তি টাকা পেয়েছে। তার ভাগের টাকা সে কোন দেশে ব্যবসায়ের কাজে লাগাতে চায়। এক্ষেত্রে সোহেল তাকে সহযোগিতা করবে কিনা?
সোহেল তো মহা খুশি! পরে সোহেল জানায়, সে রাজি আছে। কিন্তু টাকা পাঠানো যায় কিভাবে। তাও আবার বাংলাদেশি টাকা না। ডলার। এলিনা জানায় তার ওখানে একটা কুরিয়ার সার্ভিস আছে যাতে করে সে সোহেলের কাছে ডলারগুলো পাঠাতে পারে।
সোহেলও এলিনার প্রস্তাবে রাজি হয়। এরপর এলিনা টাকা পাঠিয়ে দেয় সোহেলের ঠিকানায়। ফোন আসে সেই কুরিয়ার থেকে। জানানো হয় ডেলিভারি চার্জ ব্যাংকের মাধ্যমে দিলেই কেবল সোহেল তার ব্যাগ পাবে। সোহেল জানায় তিনি টাকা হাতে হাতে পরিশোধ করবেন ব্যাগটা পাওয়ার পর। কিন্তু সোহেলকে কুরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানায় তাদের নিয়ম আগে ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করা। সোহেল যদি আগে টাকা পরিশোধ করে শুধু তাহলেই তারা সোহেলের ঠিকানায় ব্যাগটা পাঠিয়ে দেবে। সোহেল তাদের কথা মতো ১৭ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয় এক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
এরপর সোহেল ওই কুরিয়ারের নম্বরে ফোন করলে সোহেলকে জানানো হয় তার মাল কাস্টমসে আটকে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তার ব্যাগ চেক করে তারপর ছাড়বে। সোহেল পড়ে যায় চিন্তায়।
তার ডলার ভর্তি ব্যাগ চেক করলে তো মহা মুশকিল। সোহেল কোনভাবেই কোন কুল কিনারা করতে না পারায় ওই কুরিয়ারের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় সোহেল যদি ১ লাখ ৫০ টাকা দিতে পারে তাহলে আর তার ব্যাগ চেক করা হবে না।
কিন্তু সোহেলের পক্ষে কোনভাবেই দুইদিন আগে ১৭০০০ টাকা দেওয়ার পর এখন আবার দেড় লাখ টাকা দেওয়ার সম্ভপর ছিল না। কিন্তু সোহেলকে অনেকে জানায় সে যদি টাকা না দেয় আর তার ব্যাগ চেক করে এই অবৈধ বিদেশি ডলার ধরা পরে তাহলে সে সমস্যায় পড়বে।
সোহেল মেসেজ করে এলিনাকে। জানায় তার অবস্থা। বলে তার পক্ষে কোন ক্রমেই আর টাকা দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু এলিনা বলে, ‘সোহেল কোন ভাবেই তার স্বপ্ন ভাঙতে পারে না’।
এরপর সোহেল তার এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে আবার কুরিয়ারের দেওয়া সেই অ্যাকাউন্টে পাঠায়।
কিন্তু সোহেল টাকা পাঠানোর পরেই দেখতে পারে সেই ফোন নম্বর বন্ধ। এরপর আজও পর্যন্ত আর কখনও সেই নম্বর খোলা পায়নি সোহেল।
আর সেই ধারের বোঝা এখনও পুরোপুরি সোধ করতে পারেনি সোহেল। এখনও সোহেল মাঝে মাঝে ভাবে কিভাবে প্রতারিত হয়েছিলেন!
(এই লেখাটি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ফাঁদ অনুষ্ঠানের অবলম্বনে করা)
বিডি২৪লাইভ/এইচকে/টিএএফ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: