‘রাত জাগা পাখি’বদলে দিল আনিকার পুরো জীবন

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:৩৭ পিএম

খুব সাধারণ একটি মেয়ে আনিকা। আর পাঁচটা মেয়ের মতোই চলছিলো তার জীবন। একদিন তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে পরিচয় হয় রাজ নামের এক ছেলের সঙ্গে। যা আনিকার জীবনে খুব বেশি প্রভাব না ফেললেও রাজের মাধ্যমে আনিকার পরিচয় হয় স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুকের একটি পেইজ ‘রাত জাগা পাখি’র সাথে। যা এক সময় আনিকার পুরো জীবন বদলে দেয়।

রাজের সাথে নিয়মিতো ফেসবুকে কথা হতো আনিকা। রাজ আনিকাকে রাত জাগার কথা বললে আনিকা জানায় আনিকা সে রাত জাগা লোকের দলে না।

কিন্তু রাজ জানায় তার কাছে এমন জিনিস আছে যা আনিকা খেলে তার আর ঘুমই আসবে না। বিষয়টা বেশ মজাদার আর রহস্যজনক মনে হয় আনিকা। সে সন্দেহের বশত রাজের কাছে কি দিবে তা জানতে চায়। রাজ জানায় তার সাথে আনিকা দেখা করলে রাজ আনিকাকে সেই জিনিসিটা দিবে।

এরপর রাজ আর আনিকা দেখা করে। তখন রাজের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যায় আনিকা। এরপর রাজ আনিকাকে রাত জাগার ঔষধ দেয়। যা দেখে চমকে যায় আনিকা। রাজ ছোট একটা প্যাকেটে একটি পিঙ্ক কালারের ট্যাবলেট দেয় আনিকাকে। আনিকা বুঝতে পারে না এটা কি! কিন্তু রাজের দেওয়া উপহার ফেলতেও পারে না আনিকা। কারণ আনিকাকে দেওয়া রাজের প্রথম উপহার এটি।

কিন্তু এটা কোন উপহার ছিলো না ছিলো ‘মাদক’!

বাসায় ফেরার পর আনিকা রাজের দেওয়া ট্যাবলেটটা খুলে দেখেন। রাজ জানিয়েছে এই ট্যাবলেটটা খেলে
আনিকা আরও সুন্দরী হবে, স্লিম হতে পারবে। এছাড়া তার রাতে ঘুমও আসবে না।

আনিকা ফোন দেয় তার বন্ধু রায়হানকে। জানায় রাজের দেওয়া উপহারের কথা। রায়হান আনিকা বলে এটা ভালো একটা ট্যাবলেট। এটা খেলে অনেক উপকার হবে। আর সবাই খায় এটা। সাথে সাথে এই ট্যাবলেটটা কিভাবে খেতে হয় তাও আনিকাকে শিখিয়ে দেয় রায়হান।

এরপর একদিকে নতুন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা আর অন্যদিকে নিজের গন্ডি পার করার মনমানসিকতা নানান চিন্তায় কৌতুহল বশত ট্যাবলেটটা রায়হানের শেখানো নিয়মে খায় আনিকা। ছোট্ট একটি পিঙ্ক পিলের কাছে হেরে যায় সে। বদলে যায় তার জীবন।

একসময় যে মেয়েটা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতো সেই মেয়েটাই এখন সারারাত জেগে থাকে। যে মেয়েটা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতো সে এখন সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমায়।

দিন দিন বন্ধু-বান্ধব, বাবা- মা সবার সাথেও দুরত্ব বাড়তে থাকে আনিকার। ভালো সম্পর্কে তৈরি হতে থাকে রাজের সঙ্গে। রাজ এখন আর অপরিচিত কেউ না। আনিকার খুব কাছের কেউ। রাজের সঙ্গে এখন নিয়মিত মাদক সেবন করে আনিকা।

এরপর একদিন মায়ের কাছে ধরা পড়ে আনিকা। তাকে তার বাসা থেকে হাতখরচের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তারপর মায়ের ব্যাগ থেকে বেশ কয়েকবার টাকা চুরি করে ধরা খায় আনিকা কিন্তু তারপরেও থেমে থাকে না আনিকার মাদক সেবন। দিন দিন নেশার পরিমাণ বাড়তে থাকে কিন্তু কমতে থাকে টাকার পরিমাণ।

এরপর রাজের পরামর্শে তার সঙ্গে রাজের সেই ‘রাত জাগা গ্রুপে’ মাদক বিক্রি শুরু করে আনিকা। যেখানে পরিচিত সব মাদক গৃহীতারা আনিকার থেকে মাদক নেওয়া শুরু করে।

তারপর একদিন মাদক সরবরাহ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় আনিকা। বেশ কয়েকমাস জেলে কাটানোর পর বের হলে আনিকাকে তার বাবা-মা মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয় চিকিৎসার জন্য।

তারপর বেশ কয়েকমাস পর ডাক্তারদের সহোযোগিতায় মাদকাসক্ত জীবন থেকে বের হয়ে আসে আনিকা। আনিকা ফিরে পায় তার স্বাভাবিক জীবন!

(এই লেখাটি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ফাঁদ অনুষ্ঠানের অবলম্বনে করা)

বিডি২৪লাইভ/এইচকে/এসএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: