চিকিৎসকদের প্র্যাকটিস নীতিমালা নিয়ে যে নির্দেশনা দিল হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:৪০ পিএম

চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এই কমিশনের প্রধান কে হবেন? সঙ্গে কারা কারা থাকবেন তার কোনো তথ্য এখনও জানানো হয়নি। পরে তা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

একই সঙ্গে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দেয়া-সংক্রান্ত ধারাটি (১৯৮২ সালের দ্যা মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্সের ৪ ধারা কেন অসাংবিধানিক, বে- আইনি ও অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকার নিবন্ধিত কোনো চিকিৎসকরা তাদের অফিস সময়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশেনের (বিএমএ) সভাপতিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করা-সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এফআর এম নাজমুল আহসান ও কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানান, সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি অফিস চলাকালীন সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

ওই দিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী। তারা হলেন, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সালাউদ্দিন রিগান, সুজাত মিয়া, মো. আমিনুল হক এবং মো. কাওছার উদ্দিন মণ্ডল।

রিট আবেদনে সরকারি চিকিৎসকদের সম্পূর্ণরূপে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালের সব কার্যক্রম তদারকি করার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

একইসঙ্গে, রিট আবেদনে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা গঠনে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আরজি জানানো হয়েছিল।

এর আগে অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধে গত ২৯ জানুয়ারি সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

নোটিশে বলা হয়েছিল, সরকারি চিকিৎসকদের থেকে চিকিৎসা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সম্প্রতি নিজ কর্মস্থল সরকারি হাসপাতাল রেখে অনেক চিকিৎসক তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা দিচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের কর্মঘণ্টা চলাকালে সরকারি চিকিৎসকদের এমন অসদাচরণ আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। তাই সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের এই নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু সে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। আজ রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আদালত।

বিডি২৪লাইভ/এসবি/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: