তুরাগ তীরে জুমার নামাজ আদায় করবেন লাখো মুসল্লি 

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:২০ পিএম

টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে চার দিনব্যাপী ইজতেমা শুরু হয়। শনিবার মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাত শেষে জোবায়ের পন্থীরা ময়দান ছেড়ে চলে গেলে মাওলানা সা’দ পন্থীদের পরিচালনায় রোববার থেকে ফের ইজতেমা শুরু হবে।

ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, ফজরের নামাজের পর থেকে উর্দুতে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুল বয়ান শুরু করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের নোয়াখালীর মাওলানা নূরুর রহমান। ইজতেমাস্থলের মূল বয়ান উর্দূতে হলেও তাৎক্ষণিকভাবে ২৪টি ভাষায় তা তরজমা হচ্ছে।

শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন কাকরালাইলের মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের। এবারে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৫০টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তা অনুযায়ী ৬৪ জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হল এ বিশ্ব ইজতেমা। ফজরের নামাজের পর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জিকির আসকার ইবাদত বন্দেগিতে টঙ্গী জিকিরের শহরে পরিণত হয়েছে। ভোর থেকে দূরদুরান্তের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন।

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দিকে বিভিন্ন জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল এখনও আসছে। মুসল্লিদের এ ঢল আজ শুক্রবারও অব্যাহত থাকবে। পবিত্র জুমার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে বেলা ১১টার পর মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করার জন্য ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন।

ইজতেমার মুরুব্বিদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমার আয়োজন শুরু করা হয়। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৬ সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বর্তমান স্থলে স্থানান্তর করা হয়। পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কয়েকটি স্তরে বিভক্ত হয়ে পোশাক ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, তুরাগ নদীতে চেকপোস্ট ও নৌ-টহল রয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‌্যাব কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করতে ঢাকা থেকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবর্গসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ভিআইপি অতিথিরাও ইজতেমা ময়দানে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: