যে কারণে ভারত সফর বাতিল করলেন সৌদি প্রিন্স

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:১৯ এএম

পাকিস্তানের ইসলামবাদে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান প্রথমবারের মতো দু'দিনের সফর শেষে দেশে ফিরে গেছেন। কিন্তু ইসলামাবাদ সফর শেষে ভারত যাওয়ার কথার ছিল তার। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে বৈঠক করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি সিন্ধান্ত পরিবর্তন করেন। জানা গেছে, জম্মু-কাশ্মীর ইস্যু এবং জঙ্গী হামলার বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে সৌদি আরও উপলদ্ধি করতে চায়। পাকিস্তান ভারতের সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভারত সফর থাকার কথা থাকলেও ভারতের জঙ্গী হামলার বিষয়টি কৌশলগতভাবে অনুধাবন করেই তিনি সরাসরি দিল্লি সফর বাতিল করে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুই দিন সফর শেষে নিজ দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে ভারতের ইকোনোমিক টাইমস এবং এনডিটিভি।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভারতের সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এরপর সেখান থেকে তার চীনে সফরের মাধ্যমেই তার এশিয়া সফর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সরাসরি দেশে ফিরে গেছেন।

এদিকে বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ এবং আবাসন খাতে দিল্লি এবং রিয়াদের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের কথা থাকলেও। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে একঘরে করার প্রচেষ্টার মধ্যেই সৌদি প্রিন্সের পাকিস্তান সফরকে বিপত্তি হিসেবে দেখছে না ভারত। কারণ তার এই সফরের পরিকল্পনা কাশ্মীরের পুলওয়ামার হামলার আগেই গৃহীত হয়েছে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাবাসন থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তাই সবদিক থেকে ভারতের নয় বরং পাকিস্তানেরই চিন্তিত হওয়ার কারণ রয়েছে।

তবে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সৌদি প্রিন্সের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের উপর এক শক্তিশালী আলোচনা করার কথা থাকলেও জম্মু-কাশ্মীর পুলওয়ামার হামলার কারণে অনিরাপদ ভেবে তিনি ভারতে আসেননি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা টিএস তিরুমুরি জানান, নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সৌদি আরবের সাথে ভারতের গভীর সম্পর্ক আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে পাকিস্তান থেকে সফর শেষে ভারতে আলোচনায় বা সংলাপের কথা অস্বীকার করেছে ভারত, যতদিন পর্যন্ত সীমান্তে জঙ্গী হামলা বন্ধ না হবে ততদিন তাদের সাথে কোন সংলাপ শুরু হতে পারে না।

জানা গেছে, সৌদি প্রিন্সের এই সফরে উভয় দেশের যৌথ নৌবাহিনীর ব্যায়াম এবং সামগ্রিকভাবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সামগ্রিক উন্নয়নে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক পর্যায়ে 'কৌশলগত অংশীদারিত্ব কাউন্সিল' স্থাপন করার কথাও হয়েছে।

এদিকে গত দুই দিন ধরে আলোচনায়, সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে দুই হাজার কোটি ডলারের সমমূল্যের বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ চুক্তি সই করেছে। এর মধ্য দিয়ে বন্ধু দেশকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সহযোগিতার ঘোষণা দিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এর আগে গত বছর অক্টোবরে সৌদি আরব পাকিস্তানকে ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছিল।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রায় তিন বছর পর এই প্রথম সৌদি রাজপুত্রের সফর শুরু হয়, যার মধ্যে দু’দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সন্ত্রাসবাদ সহ বিভিন্ন অঞ্চলে সহযোগিতা প্রসারিত হয়। মানি নল্ডারিং এবং সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত বিষয়ে এক নতুন চুক্তি স্বাক্ষিরিত হয়।

বিডি২৪লাইভ/এসএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: