অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মরদেহে মিলছে অস্বাভাবিক বস্তু

প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৪০ পিএম

পুরান ঢাকার আরেকটি ভয়াবহ ট্রাজেডির সাক্ষী হলো বিশ্ববাসী। আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে অন্তত ৮১টি তাজা প্রাণ। দগ্ধ হয়েছেন আরো অর্ধশত মানুষ। খাবারের হোটেল, বাসাবাড়ির মানুষের পাশাপাশি পুড়ে মরেছে রাস্তার মানুষও। এই ট্রাজেডি কাঁদছে গোটা দেশের মানুষ।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৮১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪০ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে এবং তাদের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করার পর তা স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ৬৭ জনের মরদেহ মর্গে আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিহত ৪০ জনের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। তাদের মরদেহের ময়না তদন্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ২৭টি মরদেহ এখনও মর্গে রয়েছে। এই মরদেহগুলো ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের হিমাগারে পাঠানো হবে।

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, সবগুলো মরদেহের ডিএনএ স্যাম্পলের জন্য থাই মাসল, ব্লাড, দাঁত ও হাড় সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো মালিবাগ সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে। আগামী দুইদিনের মধ্যে বাকি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হলে রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে দাবিকৃত স্বজনদের সবার কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং মরদেহের সঙ্গে তা ম্যাচিং করা হবে। যদি তা মিলে যায় তখন তাদেরকে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, এই মরদেহগুলোর সঙ্গে কয়েকটি মানবদেহের অংশ পাওয়া গেছে। ডিএনএ রিপোর্টের পর বলা যাবে সেগুলো একই মানবদেহের নাকি ভিন্ন ভিন্ন মানবদেহের।

তিনি আরো বলেন, বেশকিছু মরদেহের মধ্যে আমরা সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ছোট ছোট বিভিন্ন টুকরা পেয়েছি। এগুলো কারো কারো পেটে ঢুকে গেছে, কারো মাথায় আঘাত করেছে। এছাড়াও বডি স্প্রের বিভিন্ন আইটেম মরদেহের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আগুনের পাশাপাশি এসব ধাতব টুকরার আঘাতের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বলেন, চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলে থিনারের ড্রাম পাওয়া গেছে। থিনারের ড্রামের কারণে আগুনের ভয়াবহতা বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার পর রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবনে আগুন লাগে। রাত ১টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে আগুন ভয়াবহ আকারে আশপাশের আরও ৫টি বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩২টি ইউনিট রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: