প্রবাসীরা পাচ্ছেন এনআইডি
দীর্ঘ দিন অপেক্ষার পর প্রথম বারের মত প্রবাসে বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা দিতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সচিবের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলটি এক সপ্তাহ ধরে সিঙ্গাপুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, ৩-৯ মার্চ নির্বাচন কমিশন সচিবের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলটি সিঙ্গাপুর যাবেন। তিনি বলেন, প্রবাসে ভোটার নিবন্ধন বিষয়ে সিঙ্গাপুরে এক সপ্তাহ ধরে ইসির ইন্সপেকশন টিম ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে। পুরো নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি করতে এ সম্ভাব্যতা যাচাই। সিঙ্গাপুরের পর দুবাইয়ে একটি টিম যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে কোন দেশে প্রথম এনআইডি সেবা চালু সম্ভব হবে তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে-জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের রয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন) মো. আব্দুল বাতেন, আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং একসেস টু সার্ভিস (আইডিইএ) প্রকল্পের আইটি পরিচালক উইং কমান্ডার মো. মাশায়েখ হোসেন এবং ইসির সিস্টেম এনালিস্ট ফারজানা আখতার।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার কাজ শুরু করতে চান তারা। সব ঠিক থাকলে সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাই প্রথম এ সুযোগ পাবেন। বর্তমানে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছেন। ইতোমধ্যে তাদের অধিকাংশের হাতে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, একটি প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুরে গভার্নমেন্ট টু গভার্নমেন্ট আলোচনা করবে। সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দূতাবাস ও সবার সঙ্গে কথা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেজিস্ট্রেশন কীভাবে করা যায়, কোথায় নিবন্ধন সেন্টার হবে, লোকবল কেমন লাগবে, পদ্ধতিগত কী কী জটিলতা থাকতে পারে-সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে প্রতিনিধি দল প্রতিবেদন দেবে।
সিঙ্গাপুরের পাইলট প্রকল্প সফল হলে এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এক দশক আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার দাবিও আলোচনায় আসে। এর মধ্যে সরকার ভোটারদের হাতে বায়োমেট্রিক তথ্য সম্বলিত স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু করলেও নানা জাটিলতায় প্রবাসীদের ভোটার করার প্রক্রিয়া আটকে থাকে।
কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গতবছর এপ্রিলে ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটাধিকার প্রয়োগ’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা এখনই সম্ভব না হলেও তাদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র যাতে দেওয়া যায়, সেই সুপারিশ আসে সেখানে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রথমবারের মত ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর তখনকার দুই নির্বাচন কমিশনার প্রবাসীদের ভোটার করার ও ভোট নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদেশ সফর করেন।
এর ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করে, যার লক্ষ্য ছিল বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় এনে তাদের ভোট দেওয়ার পথ তৈরি করা কিন্তু তা না হওয়ায় এবং দেশে না ফিরে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা সমস্যা ও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে এখনও। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সপ্তদশ সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন।
১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে বর্তমানে ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত। আর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ের হিসাব পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৭৫ লাখের মত।
বিডি২৪লাইভ/আরএইচ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: