পরকীয়ায় মা লাপাত্তা, জবানবন্দি শেষে পিতার জিম্মায় ৪ শিশু
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী, দুই সন্তানসহ পাঁচজন নিখোঁজের মধ্যে উদ্ধার হওয়া চার শিশুকে গার্মেন্ট কর্মকর্তা জামাল সরদারের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত। ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কাউসার আলমের আদালত এই নির্দেশ দেন।
এর আগে একই আদালতে উদ্ধার হওয়া জামাল সরদারের জনকে মেয়ে আশামনি (১১), প্রিয়া মনি (৪) ও তার ভায়রার মেয়ে সুমাইয়া (১৪) ও স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে মো. নাজিম উদিনি (৯) এর জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।
আদালতকে ওই চার শিশু গার্মেন্ট কর্মকর্তা জামাল সরদারের স্ত্রী ফরিদা বেগম ওরফে নিপার পরকীয়া সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরেন। তবে, নিপা কোথায় গেছেন তা তারা কেউ জানেন না। তাদের দাবি, সুমন নামে জৈনক ব্যক্তি তাদের বাবা পরিচয়ে মাদরাসা ও আবাসিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। ৯ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে পৃথক ভাবে মালামাল নিয়ে বের হন ফরিদা বেগম ওরফে নিপা।
জানা গেছে, জামাল সরদার গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পোষাক কারখানায় প্রোডাকাশন ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। প্রতি সপ্তাহের মতো জামাল সরদার গত ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পরে কর্মস্থল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী কন্যাদের কাছে আসেন। ৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে তিনি কর্মস্থলে চলে যান। যাওয়ার সময় স্ত্রীর হাতে বেতনের ৭০ হাজার টাকা দিয়ে যান। ১০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১০ টা থেকে স্ত্রী নিপা বেগমের মোবাইল ফোন বন্ধ পান জামাল। ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি তার ছোট ভাই খলিলকে ফোন করে পাঠান সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায়। খলিল বাসায় গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুঁলানো।
এ খবর পেয়ে জামাল সরদার বাসায় ফিরে আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ নিয়ে তাদের কোনো সন্ধান পাননি এবং তার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান। জামাল সরদার বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া তার শ্বশুরবাড়িতে জানালে তারা রহস্যজনক আচরণ করেন এবং জামালকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি প্রদান করেন।
এ ঘটনায় জামাল সরদার ১৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করে। যার নং ৬৯২। জিডি দায়েরের পর পুলিশ প্রথমে কিছুটা হেলা করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশ সুপারের নজরে আসে এই নিখোঁজের খবরটি। পরে তিনি নির্দেশ দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিখোঁজদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে জামাল সরদারের মেয়ে আশামনি, প্রিয়া মনি ও তার ভায়রার মেয়ে সুমাইয়া ও স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে মো. নাজিম উদিনিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ২০ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেন নিজ কার্যালয়ে। তিনি সেখানে পুরো ঘটনার নেপথ্য তুলে ধরেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গার্মেন্ট কর্মকর্তার স্ত্রী ফরিদা বেগম নীপা সুমন নামের এক যুবকের সাথে পালিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘর থেকে যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে গেছে তিনি। তাদের উদ্ধারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
তবে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (২২ ফেব্রুয়ারি) এখনও ফরিদা বেগম নিপাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় জামাল সরদার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার।
বিডি২৪লাইভ/এআইআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: