ভোটের প্রতি মানুষের বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই!

প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০২:২২ পিএম

সদ্য শেষ হওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নিরুত্তাপ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচনের পোস্টমোর্টেম চলছে। এর রেশ টেলিভিশন টকশো ও মহল্লার চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। থামছেই না ঢাকা সিটির উত্তর-দক্ষিণ নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা।

প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির মেয়র প্রার্থী শাহীন খানের প্রশ্ন, এত ভোটার আসল কোথা থেকে! নির্বাচনের দিন আমি নিজে দেখেছি ৩-৪ পার্সেন্টের বেশি ভোট পড়েনি। অথচ ফলাফলে শুনছি ৩৮ ভাগ ভোট পড়েছে, বিষয়টা বোধগম্য নয় বলেও জানান তিনি। আমি দুপুর ১২টায় তেজগাঁ রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেই৷ ওই সময় আমি ছিলাম চতুর্থ ভোটার।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভোটের উপরে মানুষের আস্থা নেই। গত নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ভোট হয়ে যাওয়ায়, মানুষ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ভোটারদেরে ধারণা এমন হয়েছে যে ভোট দিয়ে লাভ কী?

এদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বয়কটে এ নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই জনগণের মাঝে আগ্রহের ভাটা ছিল। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের মতে, ভোটারবিহীন নির্বাচন আনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলাফল প্রায় পূর্বনির্ধারিত ছিল বলেই মানুষের আগ্রহ ছিল না।

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তাঁর নিজ কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রয়ারি) সাংবাদিকদের বলেন, ডিএনসিসি মেয়র পদে উপনির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি। রাজনৈতিক পরিচয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তাতে ভোটারদের ভোট দিতে যেতে উৎসাহ দেখা যায় না।

নির্বাচন যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হয় ভোটার উপস্থিতি বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন৷ তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মানুষ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে৷ এর কারণ হলো, ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পাচ্ছেন না। তাদের ভোট আগেই হয়ে যায়, গত বড় (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) নির্বাচনগুলোতে যা হয়েছে তার প্রভাব পড়ছে এই নির্বাচনে৷ আমার মনে হচ্ছে সামনে উপজেলা নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে।

সাখাওয়াত হোসেনের মতে, মানুষের মাঝে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে, ভোট দিতে গেলেই কী, না গেলেই কী? এই রকম ধারণা যখন কারও জন্মে তখন আর যাই হক ভোটের প্রতি মানুষের বিন্দু মাত্র আগ্রহ থাকে না। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, যদি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হয় সেখানে গিয়ে মানুষ কাকে ভোট দেবে? আর তৃতীয়ত, ভোটের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে।

নির্বাচিত মেয়র মাত্র এক বছর ক্ষমতায় থাকবেন, সে কারণে মানুষের আগ্রহ কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বিষয় নয়, মানুষ তো আগে ৬ মাসের জন্যও ভোট দিয়েছে৷ আসল কথা হলো মানুষ লস্ট ইন্টারেস্ট৷

বিডি২৪লাইভ/এসবি/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: