ইয়াবা সুন্দরী রেখার বিয়ে বাণিজ্য!
যশোর বেনাপোলের একটি গ্রামের নাম খড়িডাঙ্গা। এই গ্রামের মোটামুটি সবাই জানেন আশরাফ আলীর নিঃস্ব হওয়ার গল্প। যে গল্পটা শুরু হয় তার বড় ছেলে আসাদুলের কারণে। যখন ওই গ্রামে আশরাফ আলীর সাথে কথা বলছিলেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদকিরা তখন তার বাড়ির উঠানে জমে গিয়েছিল কৌতুহলী মানুষের ভিড়।
প্রথম বউ রেখেই চুপচাপ দ্বিতীয় বিয়ে করেন আশরাফ আলীর বড় ছেলে আসাদুল। সে সময় পারিবারিকভাবে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন পিতা আশরাফ আলী কিন্তু ১০ লাখ টাকা দিয়েও মুক্তি মেলেনি তাদের।
এরপর শুরু হয় আরেক ঝামেলা। এক মামলার দফারফা করতে গিয়ে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে পিতা-পুত্র। তালাক করাতে গিয়ে বাপ বেটা খেয়েছেন পাঁচ মামলা। আর টাকা খরচ হয়েছে জলের মতো। পিতা ঘরে থাকতে পারছেন বটে কিন্তু পুত্র আসাদুল ঘর ছেড়েছেন মামলার ভয়ে। আর যার কারণে তাদের পরিবারটির এই অবস্থা তিনি হচ্ছেন বেনাপোল শহরের রেখা। এইসব ঘটনা নিয়ে যখন আসাদুলের পরিবার বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রীর সাথে যোগাযোগ করে তখন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রী টিম ধরেই নিয়েছিলেন আর দশটা পরিবারের মতোই এক ঘটনা। তবে কে জানতো যে এই ঘটনার মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের নাটকীয়তা। ধীরে ধীরে সামনে বেরিয়ে এলো এই রেখার নানান অপকর্ম।
খড়ি ডাঙ্গার পাশের গ্রাম পুটখালী। এই গ্রামের মো. জাকির আলীর ঘরবাড়ির চেহারা দেখতে মন্দ নয়। এক সময় গরুর ব্যবসা করে এই সম্পদ গড়ছিলেন তিনি কিন্তু এখন স্ত্রীকে সাথে নিয়ে হয়েছেন জুতার কারিগর। জাকিরের এমন পরিণতির কাহিনী নাকি তার দ্বিতীয় বিয়ে। তিনিও রেখা কে বিয়ে করেছিলেন।
তার মানে জাকিরকে বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে রেখা চলে যান খুলনাতে। খুলনাতে গিয়ে চুপচাপ করে ফেলেন আরও একটি বিয়ে। আর ততদিনে জাকির বুঝে যান তিনিও আটকে গেছেন বিয়ের ফাঁদে। আর জাকির এই ফাঁদ থেকে মুক্তি পান ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে।
বেনাপোল শহরের ভবেরবের এলাকায় যুমনা ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রীর সঙ্গে কথা হয় রেখার সাবেক স্বামী শাহজাহান আলীর সাথে। শাহজাহান আলীর হিসাব মতে তিনি রেখার ৬ নাম্বার স্বামী।
এই শাজাহান, আসাদুল, জাকির যারা রেখার দীর্ঘ বিয়ের তালিকা দিচ্ছেন, তাদেরকে ধোয়া তুলসি পাতা বলি কি করে? কারণ এরা নিজেরাও একাধিক বিয়ে করে বসে আছেন। তারা রেখার নামে অভিযোগ আনছেন বটে কিন্তু অদ্ভুত কোন সত্য একমাত্র আশরাফ আলী ছাড়া এদের মধ্যে কেউই রেখার নামে স্থানীয় থানায় অভিযোগ কিংবা মামলা পর্যন্ত করেনি।
বেনাপোল থেকে সদ্য পদোন্নতি হয়ে যশোর সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হয়েছেন ইনস্পেক্টর ফিরোজ উদ্দিন। ২০১৬ সালে তিনি ছিলেন, বেনাপোল থানার সেকেন্ড অফিসার। বেনাপোলে থাকাকালীন মেজর লিয়াকতের নেতৃত্বে রেখার বাড়িতে রেড দেওয়া হয়। ৭৯৫ পিস ইয়াবাসহ রেখাকে বেনাপোল পোর্ট থানার এনে মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলার চার্জশিট প্রদান করেন ফিরোজ উদ্দিন।
বিজিবির করা সেই মামলার এজাহারে দেখা যায়, রাত ২টায় রেখার বাড়িতে অভিযান চালায় বিজিবির ১০ সদস্যের দল। উদ্ধার করে ৭৯৫ পিস ইয়াবা। আটক করা হয় রেখাকে।
ইনস্পেক্টর ফিরোজ বলছেন, আদালতে মামলার অভিযোগ পত্র দেওয়ার পর উল্টো ঝামেলায় পড়তে হয়। রেখা তাদের নামে করে বসেন ঘুষ গ্রহণ ও ধর্ষণের মামলা। পরে রেখার সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পান পুলিশ।
তার পুরো নাম মোসাঃ রেখা। জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা একাধিক বিয়ের কাবিনে নিজেকে কখনো রেখা খাতুন কিংবা রেখা বেগম হিসাবে পরিচয় দিচ্ছে। বয়স আনুমানিক ৩৪ বছর। আদিবাস সাতক্ষীরা। তবে এখন তিনি বেনাপোল শহরের স্থায়ী বাসিন্দা।
রেখার প্রথম বিয়ে হয় ১৯৯৫ সালে ১১ বছর বয়সে। রেখার সাবেক ও বর্তামান স্বামীদের অভিযোগ গত ২৩ বছরে সে বিয়ে করেছেন ১ ডজনেরও বেশী৷
বেসরকারি যুমনা টেলিভিশনের অনুসন্ধানমূল ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রীর একটি অনুষ্ঠানের অবলম্বনে এই লেখাটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিডি২৪লাইভ/আইএইচ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: