ঢাকায় রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে রং ফর্সাকারী ক্রিম

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৯ পিএম

আপনার কুচকুচে কালো চুল কি সাদা হয়ে গেছে? যদি হয়ে থাকে তাহলে মাত্র কয়েক মিনিটে আপনার সাদা চুল কালো করে দিবে রং ও কেমিকেলের তৈরি শ্যাম্পু। আপনার কুচকুচে কালো ত্বককে মাত্র এক সপ্তাহে ফর্সা করে দিবে এসব প্রসাধনী। বিজ্ঞাপনে এমন কথা বলা হলেও বাস্তবে কি দিয়ে কিভাবে এসব প্রসাধনী তৈরি করা হয়? তা জানার আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই।

দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ধারনকৃত ‘একুশের চোখ’ নামক অনুষ্ঠানে এমন চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, কেমিক্যাল, আটা-ময়দা, চক ও বিভিন্ন রাসায়নিকের সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রং ফর্সাকারী ক্রিম। কৌটায় করে নতুন লেভেল লাগিয়ে সরবরাহ করলে বোঝারই উপায় থাকে না। ছোট ছোট ঘর থেকে বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ, হেয়ার জেল শেভিং ফোম, আফটার শেভ লোশন তৈরি হয়ে তা চলে যাচ্ছে বাজারে।

রাজধানীর অদূরে কদমতলী বন্ধ ডাকপাড়া সরু গলির মাথায় গিয়ে দেখা যায় বিশাল কর্মযজ্ঞ। রোজাক হারবাল। নামের সাথে কাজের মিল নেই। কারখানার পরিবেশেই বলে দেয় এই কারখানার পন্য কতটা স্বাস্থ্যসম্মত। কারখানায় তৈরি হয় ড্রাগ হেয়ার শ্যাম্পু। কারখানার নাম হারবাল হলেও রং আর কেমিক্যাল ছাড়া কিছুই দেখা যায়নি। প্যাকেট দেখলে যে কেউ মনে করবে বিদেশি পণ্য আর প্যাকেটও লেখা মেডইন ইউকে। কারখানায় নেই কোন কেমিস্ট! আছে কয়েকজন শ্রমিক তারা ইচ্ছা মত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করছে এসব পণ্য। কি দিয়ে এসব পণ্য তৈরি করা হচ্ছে তাও জানে না ওই শ্রমিকরা।

এবার নজর দিবো কেরানীগঞ্জের পুরাতন ভাড়ালিয়ায়। বাইরে থেকে তালা দিয়ে কাজ করছেন ম্যাডাম কোম্পানির কর্মচারিরা। একুশের চোখ টিম ভিতরে ঢুকতে চাইলে শুরু করে তাল বাহানা। তারপর ভিতরে সাংবাদিকরা ঢুকলে বের হয়ে যায় কর্মচারীরা। ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য রং ও কেমিক্যালের ড্রাম। এগুলো দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের স্কিন ক্রিম ও নেলপলিশ।

‘একুশের চোখ’ এর পরের গন্তব্য কামরাঙ্গীরচর। এখানেও রয়েছে নকল ও ভেজাল প্রসাধনীর অসংখ্য কারখানা। সাদিয়া হারবার বিডি লিমিটেড এর মালিক খোরশেদ আলম নিজেকে রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। কারখানার ভিতরে ঢোকার পর সব কিছুই পরিষ্কার হয়ে গেল। আটা-ময়দা কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ফেসওয়াশ, স্কিন ক্রিম শেভিং ফোম, হেয়ার জেল সহ নানা ধরনের প্রসাধনী।

রুমের মধ্যেও সাজানো নানা ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী। প্রতিটি কৌটার গায়ে চকচকে লেভেল লাগানো। এগুলো নাকি শসা অরেঞ্জ আম অ্যালোভেরাসহ নানা উপাদানে তৈরি। অথচ রুমের মধ্যে এগুলোর কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় নি।

রন্স কসমেটিক্স। এখানকার চিত্রও একই রকম। ড্রামে করে চক পাউডার ও কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় শেভিং ফোম, আফটার শেভিং লোশন, ফেসিয়াল ক্রিম সহ নানা প্রসাধনী। হাতে হাতেই তৈরি হচ্ছে এসব প্রসাধনী।

বিডি২৪লাইভ/আইএইচ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: