অঝোরে কাঁদলেন সেই ইমাম

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০১৯, ০১:৪৭ পিএম

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল-নুরসহ দু’টি মসজিদে ভিতরে ঢুকে অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গের এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে ওই হামলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারতো। কিন্তু দু’জন মানুষের বীরত্ব ও সাহসিকতায় প্রাণে বেঁচে যান অনেক মানুষ। ওই দুজনের একজন ছিলেন ইমাম আলাবী লতিফ এবং অন্যজন আব্দুল আজিজ।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম মেট্রোর খবরে বলা হয়েছে, লিনউড মসজিদের ঐতিহ্যবাহী মাওরি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেলেন ইমাম আলাবী লতিফ। সেখানেই দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। ওইদিনের একটি ছবিতে দেখা গেছে, তার পরনের জামা রক্তে ভিজে গেছে।

ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়াকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমাম আলাবী লতিফ। পরে আশেপাশের লোকজন তাকে সান্ত্বনা দেন।

ইমাম আলাবী লতিফ বলেন, দ্বিতীয় মসজিদের বাইরে বন্দুকধারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে যখন দেখেছিলেন, তখন তিনি লোকদের নিচে নামতে বলেছিলেন।

ইমাম বলেন, ‌‘জানালা থেকে আমি যখন তাকে দেখেছি, আমি ভেবেছিলাম সে একজন পুলিশ। কিন্তু তার পরে মেঝেতে দেখলাম একজন নারীর লাশ পড়ে আছে। আমি বললাম, "না"। আমি তাকে খুব ভালোভাবে শুনতে পারিনি। কিন্তু আমি জানি তিনি কিছু বলছিলেন।'

আলাবী লতিফ বলেন, ‘আমি বুঝতে পারলাম সে ক্ষিপ্ত এবং অবশ্যই কিছু করতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মানুষ কিছু বুঝতে পারছিল না। কিন্তু অবশেষে মানুষ জানতে পেরেছিল কী ঘটতে যাচ্ছে।’

এদিকে আফগানিস্তানের শরণার্থী আজিজ, যিনি তার চার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে লিনউড মসজিদে এসেছিলেন। হামলাকারীকে বন্দুকসহ দেখা মাত্রই তিনি হাতের ক্রেডিট কার্ড মেশিনটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি সেটিই বন্দুকধারীর দিকে তাক করে চিৎকার করেন ‘এখানে আসো’। একই সঙ্গে তিনি তার ছেলে ও অন্য মুসল্লিদের বাইরে বের করে দেন।

আজিজ বলেছিলেন, ‘যদি নিজের জীবনও চলে যায়, তারপরও আমি কেবল ভেবেছিলাম যতগুলো প্রাণ বাঁচাতে পারি। ’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চে আল নূর মসজিদে জুমার নামাজের সময় মুসল্লিদের ওপর প্রথমে সন্ত্রাসী হামলা হয়। কিছু পরে লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় হামলা হয়। দুটি মসজিদে হামলায় ৫০ জন নিহত হন। এর মধ্যে পাঁচ বাংলাদেশিও ছিলেন।

এ ঘটনায় হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেনটন ট্যারেন্টকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। একই সঙ্গে নিউজিল্যান্ডে আগামী ১০ দিনের মধ্যে অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলা আমাদের উপকূলে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কাজ ছিল। মসজিদে গুলি চালানো আমাদের অস্ত্র আইনের দুর্বলতাকে হাইলাইট করেছে এবং আমাদের এর মোকাবেলা করতে হবে।’

বিডি২৪লাইভ/এসএএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: