‘এটাই হয়তো আমার জীবনের শেষ বক্তব্য’

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৯, ০৮:৩৯ এএম

আমার মত দুর্ভাগা ও নির্যাতিত রাজনীতিক এই দেশে আর নেই, এটাই হয়তো আমার জীবনের শেষ বক্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এইচএম এরশাদ। তিনি বলেন, অনেক অত্যাচার সহ্য করে জাতীয় পার্টি টিকে আছে।

বুধবার (২০ মার্চ) গুলশানে ইমানু্যয়েলস সেন্টারে কেক কেটে ৯০তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এইচ এম এরশাদ এসব কথা বলেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবা, এত অত্যাচারের পর যারা টিকে থাকে, সে দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারে না। তোমাদের কাছে আমার একটাই আশা দলকে আরো শক্তিশালী করবে, আগামীতে ক্ষমতায় আসার জন্য পূর্ণশক্তি অর্জন করবে।’

এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রংপুর জেলায় শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬০-১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রে অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এর আগে অতিথিদের নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে জন্মদিনের কেক কাটেন এইচ এম এরশাদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ দলের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে এরশাদের সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

১৯৭১ সালে যুদ্ধের আগে ৭ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর অধিনায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এরশাদ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় ছুটিতে রংপুরে ছিলেন তিনি। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে তিনি পাকিস্তান চলে যান। পাকিস্তান থেকে আটকে পড়া বাঙালিদের সঙ্গে ১৯৭৩ সালে এরশাদও দেশে ফিরেন।

পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর ১৯৭৩ সালে এরশাদকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অ্যাডজুটান্ট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে তিনি কর্নেল ও ১৯৭৫ সালের জুন মাসে সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭৫ সালের ২৪ অগাস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি ও সেনা বাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে সেনাপ্রধান হন।

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৩০ মে ১৯৮১ সালে নিহত হবার পর, এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাষ প্রকাশ হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন তিনি। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসকের খেতাব পাওয়া এরশাদের পতন হয় গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এরপর থেকে অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে জীবনের প্রায় তিন দশক সময় পেরিয়েছেন। তবে এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম ক্রীড়ানক তিনি।

বিডি২৪লাইভ/এসএএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: