দাম বাড়াতে পতিতারা হচ্ছেন নায়িকা

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৯, ০৩:১৯ পিএম

ঢাকাই সিনেমার ক্রান্তিকাল চলছে। নেই কোন সিনেমার কাজ। কালেভদ্রে দুয়েকটা ছবি দেখা গেলেও হলে দেখা মেলে না দর্শকদের। এছাড়া কয়েকদিন পরপরই দেখা যায় অমুক সিনেমার মহরত, তমুক সিনেমার সাইনিং। কিন্তু দিন শেষে সেই সিনেমা আর শুটিংয়ের মুখ দেখে না। আবার শুটিং শুরু হলেও কয়েকদিন পরেই তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না।

বেশিরভাগ সিনেমার দৌড় মহরত পর্যন্তই। মহরতের পর ওই সিনেমার কাউকেই আর দেখা যায় না। সিনেমার নামে এসব মহরতে আড়ালে থাকে প্রতারণার ফাঁদ। কখনো এসব ফাঁদে পড়ে ফাঁসছেন স্বপ্নবাজ তরুণ-তরুণীরা। আবার কখনো ফাঁসছেন নতুন প্রযোজক। এসব ভুয়া ছবির মহরতকে ঘিরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি।

অভিযোগ আছে, রাজধানীর মগবাজারে কিছু রেকর্ডিং স্টুডিওতে কিছু অপেশাদার লোকজন প্রতারণার জন্য ছবির মহরত করছে। এসব বিষয়ে সোচ্চার না হলে আরও ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলা সিনেমা। এমনই মনে করছেন চলচ্চিত্রের মানুষরা।

এই বিষয়ে ‘প্রেমের তাজমহল’ খ্যাত পরিচালক গাজী মাহাবুব বলেন, এখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাইলে কাউকে জিজ্ঞেস করতে হয় না। স্বাধীনভাবে যার ইচ্ছা সেই ছবি নির্মাণ করে। এখন তো মগবাজারে একটি স্টুডিও দুই হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়ে মহরত করে ছবির ঘোষণা দিচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ ছবি আলোর মুখ দেখে না, তবে যে দু-একটা ছবি মুক্তি পায়, সেগুলো আমাদের অবস্থান নষ্ট করে। আমার মনে হয়, এখনই এসব প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, আজকাল দেখি আলু-পেঁয়াজের ব্যবসায়ীরাও সিনেমার নায়ক কিংবা প্রযোজক। দুই-তিন লাখ টাকা দিয়েই নায়ক বনে যায়। আবার নিজেদের দাম বাড়াতে পতিতারা হয়ে যাচ্ছে এখন নায়িকা। এসব মহরতের ছবি আলোর মুখ দেখে না। আমি মনে করি, এসব ছবির বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি দেয়া উচিত। এগুলো অপরাধ, যা প্রকাশ্যে করা হচ্ছে। এসব নায়ক-নায়িকার জন্য আমাদের শিল্পীদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, চলচ্চিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখা যায়, সবাই নায়ক-নায়িকা। কয়দিন পরপর তাদের ছবির মহরতও হয়। অথচ তারা বেশির ভাগই অপরিচিত। তাদের দেখেই অবাক লাগে। মহরতে কেক কাটা হয় তিন-চারজন নায়িকা নিয়ে। মহরতের নামে প্রতারিত হন তারা। নাম মাত্র প্রযোজকগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে মেয়েগুলোকে ব্যবহার করছে মহরতের নামে।

সেন্সর বোর্ডের সদস্য প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, এই ছবিগুলোর বেশির ভাগই সেন্সর বোর্ড পর্যন্ত আসে না। কোনো সিনেমা হলে মুক্তিও পায় না। স্থানীয়ভাবে ডিশ চ্যানেলে প্রচার করে। আবার অনেকে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে চালিয়ে দেয়। বিষয়গুলোকে নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে আমি আবারও সভায় কথা বলব।

বিডি২৪লাইভ/আইএন/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: