নৌকা-আনারস ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় মামলা, আটক ২

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৬:৩৫ পিএম

আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কথিত সহিংসতার ঘটনায় আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হাই আকন্দের কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) নৌকার কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মুক্তাগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ওই রাতে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ।

এরপর আনারস প্রতীকের পোস্টার ছিড়ে ফেলা, প্রচারনা ক্যাম্প ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীতে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতশত কর্মী-সমর্থক শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে।

মিছিলটি শহরের আটানীবাজার ছোট মসজিদের সামনে গেলে সেখানে নৌকা প্রতীকের সমর্থক আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে থাকা লোকজনের সাথে মুখোমুখি হয়।

এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষেরই কয়েক জন আহত হয়। বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুরে ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করে।

পরে ওই দিন রাতেই পুলিশ আনারসের কর্মী শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের খিলবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশীদ মেম্বার এবং আনারসের কর্মী ও টিউবওয়েল প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুশফিকুর রহমান মশিউরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কাশেমপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন বাদশাকে গ্রেফতার করে।

মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আহমেদ মোল্লা ‘ভাংচুর ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘পরিস্থিতির ভয়াবহতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে দুই রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে।’

নৌকা ও আনারস প্রতীকের দুই প্রার্থী ঘটনাস্থলে যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে নিয়েছেন। শহরে আর যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োজিত আছে।

আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হাই আকন্দ বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ থেকে পরিকল্পিত ভাবে অঘটন ঘটিয়ে আমার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, ওই দিন শহরে আমার লোকজনের ওপর হামলা করে আমার লোকজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি সাধন করে আবার আমার লোকজনের নামেই মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের ত্যাগী ও প্রবীণ কর্মী যারা শহর থেকে বহুদূরে থাকেন এবং যারা ঘটনার কথা জানেনও না তাদেরকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা দাবী করেন।

টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মুশফিকুর রহমান মশিউর বলেন, আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জামাল উদ্দিন বাদশা শহর থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূরে গ্রামে থাকেন। তিনি শহরের ঘটনার খবরও জানেন না। অথচ পরিকল্পিতভাবে তাকে আসামী করে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শংকা প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে এমন অপকর্ম বন্ধের দাবী জানান।

এদিকে সরকারী দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ থেকে নানা ধরণে হুমকি-ধামকি অব্যাহত থাকায় এলাকায় চরম আতংক বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে সাধারণ মানুষ।

ভোর্টের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের অস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিভিন্ন প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: