বিনা ভোটে পার ২২৩ প্রার্থী

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৯, ১১:৩৪ পিএম

চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে চতুর্থ ধাপে ৩০ উপজেলায় ব্যালটের ভোটের প্রয়োজন হয়নি। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্তত ২২৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আদালতের নির্দেশনায় প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় ও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় অনেকের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে আসা ঝুলে রয়েছে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা ভোট হবে রবিবার (৩১ মার্চ)। শেষ ধাপে ১৮ জুন ভোট রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো: আতিয়ার রহমান জানান, চতুর্থ ধাপে ১৫টি উপজেলায় তিনটি পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে এমন আরও ১৫টি উপজেলা রয়েছে। এবার ১০ মার্চ থেকে প্রথম ধাপের ভোট শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপের ভোট ১৮ মার্চ ও তৃতীয় ধাপের ভোট হয় ২৪ মার্চ।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দেশের ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে চার ধাপে প্রায় সাড়ে চারশ’ উপজেলায় ভোট শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তফসিল ঘোষিত এসব উপজেলায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে অন্তত ২২৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদেই বিনা ভোটে পার হয়েছেন ১১২ জন। ভাইস চেয়ারম্যান ৫২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৫৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানান নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা।

তবে ভোট স্থগিত, আদালতের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া ও শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা ফিরিয়ে আনার নির্দেশনায় আরও একডজন একক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।

ইসির সহকারি সচিব আশফাকুর রহমান জানান, চতুর্থ ধাপে ভোলা সদর, মনপুরা, চরফ্যাশন; যশোরের শার্শা; ময়মনসিংহের গফরগাঁও; ঢাকার সাভার, কেরানীগঞ্জ; কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বার, চৌদ্দগ্রাম; নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও ফেনীর পরশুরাম- এ ১৫ উপজেলায় সব পদেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কিছু প্রার্থী এখনও আটকে রয়েছেন। নির্বাচনও একধাপ থেকে অন্য ধাপে নেওয়া হয়েছিল। সব কিছু নিষ্পত্তি শেষে পূর্ণাঙ্গ তথ্য চতুর্থ ধাপের ভোটের পর চূড়ান্ত হবে। পঞ্চম ধাপের ভোটও রয়ে গেছে।

জানা গেছে, এবার দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো ভোট হচ্ছে উপজেলায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তোলার পর এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে পাঁচ ধাপে ভোট হয়। আওয়ামী লীগ-বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় দুই ধাপে; শেষে ব্যবধান বাড়িয়ে বেশিরভাগ উপজেলায় জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালে ২২ জানুয়ারি এক দিনেই দেশের সব উপজেলায় ভোট হয়। তাতে ১২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে দুইশর অধিক ব্যক্তি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলছেন, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? তিনি বলেন, আমার মতে, নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে?
প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইংরেজিতে ইলেকটেড না বলে সিলেকটেড বলা যেতে পারে কী। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ/এএইচ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: