দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর যে কারণে হেসেছিলেন শাহাজাহান খান

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:২১ পিএম

সাংবাদিকরা যদি আমাকে সেদিন উসকানি না দিতেন তবে আমি দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর হাসি দিতাম না বলে নিজের জোরালো অবস্থান তুলে ধরেছেন সাবেক মন্ত্রী শাহাজাহান খান।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ১৪ দলের আয়োজনে ‘নিরাপদ সড়ক ও মাদক মুক্ত সমাজ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমি সব সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকতে পছন্দ করি। এটা যদি অপরাধ হয় তবে আমার কিছু বলার বা করার নেই। আমার ওই হাসির পেছনে ‘সাংবাদিকদের উসকানি’ ছিল। নয়তো আমি এমন হাসি দিতাম না।

সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম পাশে বসা শাজাহান খানকে বক্তব্য রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শাজাহান খান সাহেব, আপনি আরও বলার থাকলে বলতে পারেন। তবে আপনার সবই ঠিক আছে, তবে হাসিটার জন্যই সমস্যা হয়েছিল। একথা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরি সভাপতি শাজাহান খান শেখ হাসিনার গত সরকারে নৌমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

এবার নতুন সরকারে তার ঠাঁই না হলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সম্প্রতি যে ১৫ সদস্যের কমিটি করেছে, তার প্রধান করা হয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানকে।

১৪ দলের সভায় একবার বক্তব্য দেওয়ার পর নাসিমের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আবার মাইক হাতে নিয়ে নিজের সেই হাসির ব্যাখ্যা দেন শাজহান খান।

তিনি বলেন, আজকে আমি ওই দিনের হাসির ব্যাখ্যাটা দিতে চাই। আসলে ওই দিন আমি সাংবাদিকদের জন্য হেসেছিলাম।

৬৮ বছর পর মোংলা বন্দরের জট ছুটতে যাচ্ছে- এই কথা বলার সময় হঠাৎ করে একজন সাংবাদিক আমাদের প্রশ্ন করল- ‘আপনার আস্কারায় আজকে সড়কে দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে।

আমার নাকি আস্কারা? এই কথায় আমি একটু হেসেছিলাম। তাছাড়া আমি একটু বেশি হাসি দেই। তবে এই হাসির জন্য উস্কানি দিয়েছে সাংবাদিকরা।

গত বছরের ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী মারা গেলে সড়কে বিক্ষোভ দেখায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

ওই দিনই সচিবালয়ে মোংলা বন্দরের জন্য মোবাইল হারবার ক্রেন কেনার চুক্তিপত্র স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে হেসে ওঠেন শাজহান খান।

শাজহান খানের হেসে হেসে উত্তর দেওয়ার ভিডিও ইন্টারনেটে সামাজিকে যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পরদিন তার পদত্যাগসহ সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা। নয় দিন প্রায় অচল ছিল ঢাকার সড়ক।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: