সেই অধ্যক্ষকে বেত দিয়ে পিটিয়েছিলেন নুসরাতের মা!

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:০০ এএম

ফেনীর সোনাগাজীর নিহত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মা শিরিন আক্তার মেয়েকে যৌন হয়রানি করার কথা শুনেই অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে বেত দিয়ে পিটিয়েছিলেন।

সোনাগাজী উপজেলার উপজেলার চর চান্দিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান শিরিন আক্তার।

মেয়ের পূর্বের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে শিরিন আক্তার জানান, তাকে নিয়েই ছিল নুসরাতের যত আহ্লাদ। ছোটবেলা থেকেই মাকে ছাড়া তিনি ঘুমাতেন না। মাকে নিয়ে দেয়ালে অনেক কিছু লিখেছেন। ছোটবেলা থেকেই বেশ সাহসী ছিলেন নুসরাত।

২৭ মার্চ শ্নীলতাহানির ঘটনার পরবর্তী অবস্থা বর্ণনা করে শিরিন আক্তার বলেন, 'ঘটনা শুনেই আমি মাদরাসায় গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি অধ্যক্ষ হাত-পা ছেড়ে বসে আছেন। মেয়েকে শ্নীলতাহানির বিষয়ে প্রশ্ন করার পর তিনি আমাকে রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের ভয় দেখান। আমি ভীত না হয়ে সামনে পাওয়া একটি বেত দিয়ে অধ্যক্ষকে কয়েকবার বেত্রাঘাত করি।’

তিনি বলেন, এ অবস্থা দেখে অনেকেই জড়ো হয়ে যান। সেখানে বসেই আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিষয়টি চেপে যেতে বলেন।

নুসরাতের মা আরো বলেন, অনেক আগে থেকেই মাদরাসার অধ্যক্ষের অপকর্মের কথা শুনে এসেছি। আমরা আলিম পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর নুসরাতকে অন্য মাদরাসায় নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করেছি। তার আগেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নুসরাত চিরবিদায় নিল।

প্রসঙ্গত, নুসরাতকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন তার মা। এ মামলায় গত ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হয় অধ্যক্ষ সিরাজ। ওই মামলা তুলে নিতে গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।

পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত চিকিৎসার জন্য নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোরও পরামর্শ দেন তিনি। কিন্তু সবার প্রার্থনা-চেষ্টাকে বিফল করে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে মারা যায় ‘প্রতিবাদী’ নুসরাত।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: