নানী, খালাদের খোঁজে ডাচ্‌ তরুণী বাংলাদেশে

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২৭ এএম

“আমি নাওমি, নেদারল্যান্ডস-এ জন্ম, সেখানেই বড় হয়েছি। ১৯৭৭ সালে আমার মাকে বাংলাদেশ থেকে দত্তক নেয়া হয়েছিল। আমি আমার মায়ের শেকড়ের সন্ধানে বাংলাদেশে এসেছি। আমার মায়ের জন্মস্থান বাংলাদেশ, সে কারণে আমিও বাংলাদেশেরই একটা অংশ। যদিও বাংলাদেশ সম্পর্কে আমি তেমন কিছুই জানি  না। আমি এই প্রথম এখানে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে।

বাংলাদেশের মানুষ খুব অতিথিপরায়ণ। তাই আমার নানী এবং দুই খালাকে খুঁজে পাবার বিষয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী। এ ব্যাপারে আমি বাংলাদেশের মানুষের সাহায্য চাই। মানবজমিন এবং তার পাঠকদের সাহায্য চাই।”

আলাপ হয় নাওমির সফরসঙ্গী আন্তর্জাতিক শিশু পাচার রোধ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুণ দোহল এবং আইনজীবী অঞ্জলি পাওয়ারের সঙ্গেও। তাদের দেয়া তথ্য মতে:
১৯৭৪ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার মাদারগঞ্জ এলাকার চরকাজী গ্রামের মো. আরসি শেখ মারা যান। তখন দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। আরসি শেখের মৃত্যুর দুই মাস আগে তার স্ত্রী সকিনা বেগমের গর্ভে এক কন্যা শিশু জন্ম নেয়। শিশুটির নাম রাখা হয় লিপি বেগম। কিন্তু তিন মেয়েকে (লিপিরা তিন বোন) লালন পালন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ায় বিধবা সকিনা বেগম নিরুপায় হয়ে মাত্র তিন মাস বয়সী শিশু লিপি বেগমকে ঢাকায় একটি এতিমখানায় দিয়ে আসেন।

১৯৭৭ সালে নেদারল্যান্ডস-এর একজন নাগরিক সেখান থেকে তিন বছর বয়সী শিশু লিপি বেগমকে দত্তক নেন। পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডস-এর নাগরিক জেসপিয়ার উইলেমসেন লিপিকে বিয়ে করেন। লিপি এবং জেসপিয়ারের সংসারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তিনিই হলেন আজকের নাওমি উইলেমসেন। নাওমির বয়স এখন ২১ বছর।

ঢাকার সেই এতিমখানার সূত্র ধরে জন্মের প্রায় ৪৪ বছর পর নাওমির মা লিপি বেগম গত বছর তার স্বামী জেসপিয়ারকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। কিন্তু কোনো স্বজনের খোঁজ না পেয়ে ভগ্নহৃদয়ে নেদারল্যান্ডস ফিরে যান। এবার এসেছে তাদের মেয়ে নাওমি। প্রায় দুই সপ্তাহ বাংলাদেশে অবস্থান করে ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে নানী-খালা কারো খোঁজ না পেয়ে ১২ই এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে ফিরে যায় নাওমিও। এ ব্যাপারে সে যোগাযোগ করেছে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও। কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি নাওমির নানী সকিনা বেগম বা তার দুই খালার (বয়স আনুমানিক ৪৫-৫০ বছর) কোনো সন্ধান পেলে মানবজমিন অফিসে যোগাযোগের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেল। উল্লেখ্য, ছবি দুটি নাওমির এবং তার মা লিপি বেগমের।

গল্প নয় সত্যি! মানবজমিন প্রতিনিধি তারিক চয়নের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেন নাওমি উইলেমসেন। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: