উপরতলার মানুষদের জন্য অপরাধের মাত্রা বাড়ছে

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৩:৪৩ পিএম

বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও একুশে পদক প্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার বলেছেন, সমাজের উপরতলার মানুষের মাঝে যখন অবক্ষয় ঘটে, তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই উপরতলার মানুষরাই নানান সময় নানান ধরণের অপরাধ করে এবং অল্পতেই পার পেয়ে যায়। সে জন্যই অপরাধের মাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। 

তিনি আরও বলেন, দেশে ধর্ষণের মাত্রা মহামারি আকার ধারণ করেছে, কারণ অনৈতিক শিক্ষা। ইতোমধ্যে আদলত বলেছে, অনৈতিক শিক্ষার কারণেই ধর্ষণের মাত্রা বেড়েছে। অতএব শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ রয়েছে। যারা দেশ পরিচালনা করছে তারা কি এসব দেখছে না? 

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিডি২৪লাইভের স্টাফ করেসপন্টেন্ড শিমুল বারীর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা শুধু মাত্র সিলেবাসের মধ্যেই নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে যে নৈতিকতা জিনিসটা কী? নৈতিকতা সম্পর্কে জনমত সৃষ্টি করতে হবে। আর সমাজের সর্বস্তরে যদি সর্বোপরি জনমত তৈরি হয় তাহলে অবশ্যই সর্বক্ষেত্রে নৈতিক শিক্ষার বিস্তার ঘটবে।

সমাজে কেন এত হানাহানি এবং অবক্ষয়? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক যতীন সরাকার বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ ঢুকে গেছে। কি ভাবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কেউ আর জ্ঞানের জন্য পড়ালেখা করতে চায় না। সবাই এখন নম্বর পাওয়ার জন্য লেখাপড়া করে। এতে করে প্রকৃত শিক্ষায় সে শিক্ষিত হতে পারছে না। শুধু মাত্র চাকুরী লাভের আশায় যদি পড়ালেখা করা হয়, তবে আর যাই হোক নৈতিক ও মেধার বিকাশ লাভ করবে না এটা স্পষ্ট। শিক্ষকদের মাঝে অবক্ষয় আরও বহু গুন বেড়েছে, যেমন ধরুণ নুসরাত হত্যাকাণ্ডে কী দেখছি? শিক্ষক হয়ে এমন বর্বর কর্মকাণ্ড কেউ করতে পারে? এমন ঘটনাও এই শেষ জীবনে এসে দেখতে হচ্ছে? কষ্ট আর রাখব কোথায়?

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ সব সময় সমাজে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করেছে সর্বদা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এরা কখনও সমাজে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। উপরতালার মানুষরাই সব সময় নীতি ও নৈতিকতার কাজ করে যাচ্ছে, যোগ্যতা না থাকার পরও। এতে করেই সমাজে দূরাবস্থা বেড়েছে বহুগুন। আমি মনে করি উপরতলার মানুষ যখন ঠিক হয়ে যাবে সমাজে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট ও নৈরাজ্য কমে যাবে। আমি মনে করি সমাজের এসব অবক্ষয়ের জন্য উপরতলার লোকরাই দায়ী। এরাই দেশের খারাপ অবস্থার জন্য দায়ী। এরা যদি নীতি, নৈতিকতার দিক থেকে ঠিক হয়ে যায় তবে সমাজে নৈরাজের মাত্রা অনেকাংশে কমে যাবে।

তিনি বলেন, পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও দায়িত্ব রয়েছে ছেলে-মেয়েদের নৈতিক শিক্ষা দেয়ার। কিন্তু তা কি দিতে পারছে? কেন এত হানাহানি? কাল গাজীপুরে এক ছেলে এক মেয়েকে প্রেমে প্রত্যাখ্যান হয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে, এ সব কিছুই মূলবোধের অবক্ষয়জনিত বলে জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ/এসবি/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: