নুসরাত হত্যা, আদালতে জবানবন্দি দিতে হাসিমুখে হাফেজ কাদের
ফেনী সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা মামলার এজাহারভুক্ত সাত নম্বর আসামি হাফেজ আবদুল কাদের। তাকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আদালতে জবানবন্দি দিতে হাসিমুখে দেখা যায় নুসরাত হত্যার অন্যতম আসামী হাফেজ কাদেরকে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ফেনীর বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিনের আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলা জবানবন্দিতে ঘটনার দায় স্বীকার করে হাফেজ আবদুল কাদের।
এদিকে পিবিআই জানায়, বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকার ৬০ ফিট এলাকাসংলগ্ন ছাপড়া মসজিদের পাশে আবদুল কাদেরের বড় ভাই রহিমের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত আবদুল কাদের সোনাগাজী আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠান বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। তার বাবা সাহেবের হাটের চা দোকানি। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে হাফেজ আবদুল কাদের পঞ্চম। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার অনুগত হিসেবে মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকতেন আবদুল কাদের। তার বাবা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। সে সরাসরি শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
তবে উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মোস্তফা জানিয়েছেন অপকর্মের দায়ে তাকে শিবির থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
আদালতের জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে হাফেজ কাদের জানান, ঘটনার দিন তিনি মাদ্রাসা গেটে পাহারাদার হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এর আগে অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনেও অংশ নেন। নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার একদিন আগে কারাগারে ওই অধ্যক্ষের সঙ্গে অন্যদের নিয়ে দেখা করেন।
এ পর্যন্ত নুসরাত হত্যা মামলায় দায়ে ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ্দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, আবদুর রহিম শরিফ, মো. শামীম ও হাফেজ আবদুল কাদের।
প্রসঙ্গত, ৬ এপ্রিলে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অনুগত কয়েকজন শিক্ষার্থী। গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিনই গুরুতর আহত অবস্থায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শরীরে ৭৫ শতাংশের বেশি পোড়া নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত বুধবার হার মানেন নুসরাত। এর মধ্যে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।
বিডি২৪লাইভ/এসএএস
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: