আবারও ধানে ব্লাস্ট ছত্রাকের আক্রমণ
এ বছর চলতি বোরো মৌসুমে অন্য বছরের থেকে ধানের ফলন তুলনামূলক ভাল। তবে সাতক্ষীরা জেলায় ইরি-বোরো ধানক্ষেতে গত বছরের মত এ বছরেরও ছত্রাক ব্লাস্ট আক্রমনে দেখা দিয়েছে। এর ফলে ধানক্ষেতের ভাল ধান শীষ সব চিটে ও সাদা হয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিকে ব্লাস্টের আক্রমন অল্প সংখ্যক পরিলক্ষিত হলেও দিনের ব্যবধানে সমস্ত ক্ষেত জুড়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে। অনুমোদিত কিটনাশক ব্যবহারেও কোন ভাল ফল পাচ্ছেন না ধান চাষী কৃষকরা।
ফলন ভাল থাকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হলেও ব্লাস্টের আক্রমনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ধান গবেষকরা। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় মোট প্রায় ৭৩ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করলেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৬ হাজার ৩২৫ হেক্ট চাল উৎপাদনের।
কৃষকরা দাবি করছেন, অনুমোদিত কিটনাশক প্রয়োগ না করার ফলে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিচ্ছে। ভেজাল কিটনাশক প্রয়োগে এমন বিদ্রূপ দেখা দিচ্ছে বলে জানান। এদিকে কৃষিবিদদের দাবি, দেশে মৌসুম ভেদে নানা ধরনের ধান রোগ সৃষ্টি হয়, সেটা স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ ছাড়া কিটনাশক প্রয়োগ উচিৎ নয়। কিন্তু কৃষি অফিসে খবর দিলে অফিস কর্তৃপক্ষ হেয়ালী করেন।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ধান চাষী মিজান হোসেন জানান, অন্য বছরের তুলনায় ধানের ফলন মোটামুটি ভাল। ব্লাস্ট রোগের কারণে ক্ষেতে ধানের শীষ পচন ধরেছে। যেটা প্রথমে ধানের শীষকে সাদা করে দিচ্ছে। ধীরে ধীরে ধানের সমস্ত শীষ কালচে বর্ণ ধারণ করছে। কিটনাশক প্রয়োগের কোন ত্রুটি না থাকলেও ব্লাস্টের আক্রমন কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে অপর এক কৃষক জানান, কিছু দিন পর ধান কাটতে হবে। এ ধান পাঁকার সময়কালে ব্লাস্ট বেশি দেখা দিচ্ছে। ক্ষেতের সব ধান চিটে আর সাদা হয়ে যাচ্ছে। কৃষি অফিসে বারংবার পরামর্শ নিতে গেলেও কর্মকর্তার ক্ষেতে আসার কথা বললেও আসছেন না। চার একর জমিতে সর্বোচ্চ হলে ৫০ মণ ধান হবে মাত্র। যেটা লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকাংশে কম।
তিনি আরও জানান, গত বছরের তুলনায় ব্লাস্টের আক্রমণ অনেক কম। এ বছর অল্প সংখ্যাক ক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমণ চোখে পড়েছে যেটা গত বছরের তুলনায় কম। প্রয়োজনী সঠিক কিটনাশক প্রয়োগের ফলে অন্য ধানক্ষেতগুলো ব্লাস্টের আক্রমণ থেকে রেহায় পাবে বলেও জানান এ কৃষক।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, চলতি বছরে জেলায় মোট প্রায় ৭৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৭৬ হাজার ৩২৫ হেক্টর চাল উৎপাদনের কাছাকাছি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশী উৎপাদন হবে বলে আশা করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
ব্লাস্ট রোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে জেলার কিছু কিছু এলাকায় ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা গেছে। ব্লাস্ট আক্রান্ত এলাকায় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষি অফিসার পাঠানো হচ্ছে। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন ধান চাষী কৃষকদের। অনুমোদিত কিটনাশক প্রয়োগ এবং মাত্রাধিক কিটনাশক প্রয়োগ না করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিডি২৪লাইভ/এজে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: