কেরোসিন ঢেলেছিল জাবেদ, বুক চেপে ধরে মনি

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৪ এএম

ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে তার সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ। নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলেছিল জাবেদ। অন্যদিকে বুক চেপে ধরে কামরুন্নাহার মনি।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহম্মদের আদালতে তাদের উপস্থাপন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।

তিনি বলেন, আদালতে এ দুইজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, তারা তাদের সহপাঠী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার মিশিনে সরাসরি জড়িত ছিলো। জাবেদ নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়। আগুন ভালো করে লাগার জন্য মনি নুসরাতের বুকসহ শরীর চেপে ধরে।

তিনি আরও বলেন, কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ দুজন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছে। এতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।

এদিকে মনিকে ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১৭ এপ্রিল একই আদালতে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেয়। অপরদিকে জাবেদকে ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে আবার তিনদিনের রিমান্ড দেন।

উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪-৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দেয়া হয়। পরে ওই দিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যায় নুসরাত।

এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মামলার এজহারের ৮ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৫ জন। ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেয়া হয়।

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

বিডি২৪লাইভ/এসএএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: