প্রস্তুত সংসদ সচিবালয়: বিএনপি কি শপথ নিবে?

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৩:১৮ পিএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপির ছয় এমপির শপথ নেওয়ার সুযোগ আছে আর মাত্র ৮ দিন। সময়ের আবেদন না করলে ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই শপথ নিতে হবে তাদের। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচিত এমপিরা। তবে সংসদে তাদের গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সংসদ সচিবালয়।

সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তিসহ নানা বিষয়ে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে তাদের শপথ। তবে শপথের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্ট এমপিরা। যদিও ছয় এমপির শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে বিএনপি অটল আছে বলে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

এ বিষয়ে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপি নেতা মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বলছিলাম যে, ম্যাডামের মুক্তি হলে বিষয়টা ‘হার্ড অ্যান্ড সোল’ ভেবে দেখব, কিন্তু এখনও ভালো কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। আর সময়ও তো আছে মাত্র ৯ দিন। নিয়মানুযায়ী ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই শপথ নিতে হবে। তবে সময়ের আবেদন করলে সংসদ তা বিবেচনা করতে পারে।

মানসিকভাবে শপথ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতের কথা জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, শপথ নেওয়া তেমন কোনো বিষয় নয়। সিদ্ধান্ত হলেই শপথ নিতে বেশি সময় লাগবে না।

তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমি শপথ নেব না। অন্যরাও একই কথা বলেছেন। তবে শেষ সময় পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এজন্য আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যেই আছি।

সূত্রমতে, গেল বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে অংশ নেয় বিএনপি। এতে ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের দুইজন এবং বিএনপি থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মাত্র ছয়জন নির্বাচিত হন।

কিন্তু এ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে ফল প্রত্যাখ্যান এবং নতুন নির্বাচনের দাবি জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পরবর্তী সময় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, তাদের নির্বাচিতরা শপথ নেবেন না এবং সংসদে যাবেন না।

তবে শুরু থেকেই বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন ছিল যে, শেষ পর্যন্ত এদের সবাই শপথ নিতে পারেন। এক পর্যায়ে নানা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দুই দফায় গণফোরামের দুই এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খানের শপথের মধ্য দিয়ে সেই গুঞ্জন কিছুটা বাস্তবে রূপ নেয়। সর্বশেষ বিএনপির নির্বাচিত ছয়জনেরও শপথ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে।

জানা যায়, গণফোরামের দুইজনের পর বিএনপির ছয় এমপির শপথের বিষয়ে সরকারি মহল থেকে তৎপরতা চালানো হয়। বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

শপথ নিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও আভাস দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পর্দার অন্তরালে আলোচনার কথাও বিভিন্ন মহল থেকে শোনা গেছে।

তবে খালেদা জিয়ার প্যারোলের পরিবর্তে জামিনে মুক্তি চান বিএনপির অধিকাংশ নেতা। এ নিয়েই মূলত সমঝোতার বিষয়টি ঝুলে আছে বলে জানা গেছে। যদিও এ ধরনের সমঝোতার কথা নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপি নেতা মো. হারুনুর রশীদ বলেন, আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। আমরা শপথের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত, তবে দলীয় সিদ্ধান্ত কি হয় সেজন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, শপথের বিষয়ে এখন পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার চিন্তা আমার নেই। তবে পরে কি করব না করব তা সময় হলে বলতে পারব।

একই ধরনের মন্তব্য করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, শপথ নিয়ে কি হবে, কিছু বুঝতে পারছি না। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের সিদ্ধান্তের ওপরই আছি, বাইরে যাওয়ার চিন্তা নেই।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: