ফেরিঘাটে যাত্রী হয়রানী, অসহায় যাত্রীরা

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:২২ পিএম

হারুন-অর-রশীদ,
ফরিদপুর থেকে:

নদীর ঘাটে নৌকা দিয়ে লোক মালামাল পারাপার করে জীবিকা নির্বাহকারীদের পাটনি বলে অভিহিত করা হয়। যখন ঘাট ইজারা দেওয়ার পদ্ধতি চালু হয় তখন পাটনিরাই ঘাট ইজারা নিতো। তবে যুগের পরিবর্তনের সাথে তাদের জীবন ধারাও বদলে গেছে। এখন ঘাট পাটনিদের নামে ইজারা প্রদান হলেও অন্তরালে থাকে বিত্তবান শ্রেণী। ক্ষমতা, প্রভাব প্রদর্শন বা অন্য কোন কারণে ঘাট ইজারা নেওয়ার প্রতিযোগীতায় নামে তারা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ফরিদপুর চরভদ্রাসন উপজেলার চরভদ্রাসন, মৈনট আন্ত: জেলা লঞ্চ, ফেরী ঘাটটি নিয়ে চলছে পাল্লাপাল্লি।

প্রতিনিয়ত বৃদ্ধিপাচ্ছে ইজারা মূল্য। ১৪২৪ সালে (ভ্যাট বাদে) এ ঘাটের ইজারা মূল্য ছিল ২ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু পরের বছর ঘাটটির ইজারা মূল্য আসে ৪ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। গত ১৭ জানুয়ারী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় কর্তৃক ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ১৪ টি আন্ত:জেলা ও আন্ত বিভাগীয় লঞ্চ, ফেরী ঘাটের দরপত্র মূল্যের ১৩ টি ঘাটের মোট ইজারা মূল্য আসে ২ কোটি ৬৭ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭ শত ৯৮টাকা পক্ষান্তরে চরভদ্রাসন মৈনট আন্ত: জেলা ফেরী ঘাটটি ইজারা মূল্য ৪ কোটি ৭৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। যা ১৩টি ঘাট মিলে যে অংক আসে তার থেকে ২ কোটি ৬ লক্ষ ৫২ হাজার ২ শত দুই টাকা বেশী।

যে টিকিট যাত্রীদের দেওয়া হয় তাতে ভাড়ার কোন পরিমাণ লেখা নেই আর এ টাকা তুলতে নিপীড়িত হতে হয় যাত্রী সাধারণকে বৃদ্ধি করা হয় ভাড়ার পরিমাণ।বাংলা এমনই তথ্য পাওয়া গেছে চরভদ্রাসন/মৈনট আন্ত: জেলা ফেরী ঘাট নিয়ে।

সরেজমিনে চরভদ্রাসন অংশের গোপালপুর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ট্রলার প্রতি ৮০ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা ও স্পীডবোর্ডে ১৬০ টাকার পরিবতে ১৭০ টকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন পহেলা বৈশাখের কথা বলে দু’পারেই ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। কিছু বলতে গেলে দুর্ব্যবহার করে আমাদের সাথে।জন দুর্ভোগের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকায় লেখালেখি হলেও অজ্ঞাত কারণে তার কোন সুবিধা পায়নি যাত্রীরা। অনেক প্রবাসীর অভিযোগ ভাড়া ও সময় বাচাঁতে গোপালপুর ঘাট দিয়ে চলাচল করি কিন্তু মালামাল পার করতে যে পরিমাণ টাকা গুণতে হয় তাতে নিজেদেরকে অনেক অসহায় মনে হয়।

এ ব্যাপারে ঘাট মালিক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি এস এম শাহীন আনোয়ার ভাড়া বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা গত বারের চেয়ে শতকরা ১০ টাকা বেশী দিয়ে ঘাট কিনেছি। আর ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আমরা আবেদন করেছি। তবে যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, আবেদন অনুমোদনের পূর্বে ভাড়া বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। পূর্বের ভাড়া নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সুশিল সমাজের মতে পাল্লাপাল্লির কারণে ঘাটটি কোটি টাকা ইজারার মাধ্যমে রাজস্ব আয় হলেও মূলত সেই টাকা তুলতে নিরীহ জনগণ নিপীড়িত হয়। তাছাড়া ঘাট হতে অর্জিত রাজস্বের অর্থ কতটুকু সৎ ব্যবহার হয় তা নিয়েও রয়েছে নানা জটিলতা। বিভাগীয় ভাবে ইজারা প্রদানরের পূর্বে যদি নদীর দূরত্ব বুঝে জ্বালানী খরচ হিসেব করে জনবান্ধব ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয় এবং তা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান নেওয়া যায় তবে ঘাটের ইজারা মূল্য কমে আসবে। স্বস্তি ফিরবে জনমনে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: