সন্তানকে এক পলক দেখতে দেশে ফিরছেন বাবা

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৪৮ পিএম

আদরের সন্তানকে এক পলক দেখতে সিঙ্গাপুর থেকে দেখের পথে বাবা প্রবাসী আবুল কালাম আজাদ। পুত্রের মৃত্যুর খবরে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন বলে জানান নিহত মরনের মা নুসরাত জাহান।

তিনি জানান, আমার মিরন তার বাবার খুব আদরের সন্তান ছিল, প্রতিদিনই বাবার সঙ্গে সে ইমোতে কথা বলতো, রাতেই মোবাইলে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। ছেলের মুখ দেখতে সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরেই বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের পথে রওয়ানা দিয়েছেন।

তিনি দেশে আসার পরই গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হবে। এর আগে রোববার শবে বরাতের রাতে নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কুমিল্লা নগরীতে সহপাঠীদের ছুরিকাঘাতে নগরীর মর্ডাণ স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মোমতাহিন ইসলাম মিরন (১৪) নামে নিহত হয়েছে।

সে জেলার সদর উপজেলার ঝাগুরঝুলি বিষ্ণুপুর এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের ছেলে। মিরনের পরিবার নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। সে ৪ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। এ ঘটনায় সোমবার বিকালে তার চাচা কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লা মডার্ণ হাইস্কুলের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বসা নিয়ে মিরনের সহপাঠী আবিরের সঙ্গে ৭ম শ্রেণির পল্টুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। রাতে শবে বরাতের নামাজ পড়তে মিরন ও তার বন্ধু আবির নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার মদিনা মসজিদে যায়। সেখানে নামাজ থেকে বের হওয়ার পর মিরন ও আবিরের সঙ্গে পল্টু ও তার বন্ধু আমিনের বাকবিতন্ডা হয়।এ সময় উভয় গ্রুপের হাতাহাতির এক পর্যায়ে আবিরকে বাঁচাতে মিরন এগিয়ে গেলে আমিন ও পল্টু তাকে মারধরসহ ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মিরনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে মিরনের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর বিকেলে নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। পরিবারের সদস্য ছাড়াও সহপাঠীদের অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। মিরনের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবার ও সহপাঠীরা।

মা নুসরাত জাহান আরও জানান, রাত ৮টর দিকে নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে যায় মিরন। রাত ১০টার দিকে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানতে পারি। পূর্ব বিরোধের জের ধরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মডার্ণ স্কুলের ছাত্র পল্টু, আবির ও আল আমীন আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া পিপিএম জানান, নিহতের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: