দ্বিতীয় দিনে ফের উত্তাল নীলক্ষেত

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২৯ এএম

গণহারে ফেলসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধসহ নীলক্ষেত মোড়ে আবারও অবস্থান নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আবারও সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এর আগে সেশনজট নিরসন, ত্রুটিপূর্ণ ফল সংশোধন এবং ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতা দূর করাসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মানববন্ধন শুরু করেন সাত কলেজ অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে নীলক্ষেত মোড়ে এসে টানা সাড়ে চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

এ সময় অন্তর্ভুক্ত সাত কলেজের নানা সমস্যা তুলে ধরে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ‘গণহারে আর ফেল নয়, যথাযথ রেজাল্ট চাই’, ‘শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা নয়’ এসব স্লোগান দেয়া হয় বিক্ষোভে।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়।২ বছর ২ মাস পেরিয়ে গেলেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কোনো সুফল ভোগ করতে পারছে না।

তাদের আরও দাবি, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। সবশেষ পরীক্ষায় ঢাকা কলেজ বাংলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২১৬ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সব বিষয়ে পাশ করেছেন মাত্র ৩ জন। রসায়নে ৪৮ জনের মধ্যে ৪০ জন অকৃতকার্য হয়েছেন। ঢাকা কলেজ ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২৪৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১৩ জন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন- ইডেন কলেজের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ৩০০ জন শিক্ষার্থী প্রথমবর্ষে শুধু বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে ফেল করার পুনরায় সবার খাতা নিরীক্ষণের আবেদন করেন। পরবর্তীতে প্রকাশিত ফলাফলে ৩/৪ জন ছাড়া সবাই পাশ করে।

উল্লেখ্য, এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির সরকারি সাত কলেজের তীব্র সেশন জট, ত্রুটি পূর্ণ ফলাফল এবং ফলাফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানান সমস্যা সমাধান দাবিতে ঢাকা কলেজের গেটের সামনে আমরন অনশন শুরু করেন তারা।

আমরণ অনশনে যাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের ছাত্র আবু নোমান রুমি, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ২০১৬-১৭ সাকিব, ২০১৭-১৮ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ও ২০১৫-১৬ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মোঃ রায়হান।

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাধানীর সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এ কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে পরিচালনার দায়িত্বভার পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্তে সাত কলেজকে অধিভুক্ত করা হলেও তথ্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত জটিলতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেষারেষিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত শিক্ষার্থীদের তথ্য না পাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম থমকে যায়।

বিডি২৪লাইভ/এমই/এসএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: