ইবি ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থা জারি, আটক ২২

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০২:২৪ পিএম

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভূক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনের তিন দফা দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে তারা।

শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ঠেকাতে ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের বহনকারী সমস্ত গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে না পারায় দশটি বিভাগের পূর্বনিধারিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে গতকাল থেকে আমরণ অনশনে যাওয়া পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীদের বুধবার (২৪ এপ্রিল) ভোর রাতে অনশন অবস্থায় আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে বলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা সূত্রে জানা গেছে।

&dquote;&dquote;
এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, ‘২২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তাদরকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাবাদ করা হচ্ছে।’

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে গতকাল থেকেই ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভূক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছিল। অনশনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও প্রশাসন এবং অনুষদের ডিন শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা না করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ২টার দিকে অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এর ফলে অফিসের ভেতরে আটকা পড়েন ডিন অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মমিন ও পিওন বাদল। এরপর রাত ৯টায় অবরুদ্ধ দুই কর্মচারীদেরকে উদ্ধার করতে আসেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র-উপদেষ্টা ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ। তারা ভবনের ভিতরে ঢুকলে তাদেরকেও অবরুদ্ধ করে আন্দোলনকারীরা।

পরে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে উদ্ধার করতে রাত ১ টার দিকে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আনিছুর রহমান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান-উল হক আম্বিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর রাত ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলককারীদের সাথে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হন তারা।

এর আগে রাত সাড়ে ১১টা থেকেই ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরে সাড়ে রাত ৪টার দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত অতিরিক্ত ডিএসবি মোস্তাক, ডিএসবি মোস্তাফিজুর রহমান, মিরপুর জোনের এএসপি ফারজানা ইসলাম এবং ইবি থানার ওসি রতন শেখের নেতৃত্বে ক্লবসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।

ভিতরে ঢুকে ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা ও দুই কর্মচারীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা করিডোরে অবস্থান নিয়ে ব্যারিকেট দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে এবং শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ বাহিনী অভিযানে বাছাই করে আরিফুল ইসলাম, তারিক, রাজ, মাহাদী, রিয়াদ, অভি, দেলাওয়ার, হাফিজ, সাব্বিরসহ ২২ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। অন্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছে পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সভা সমাবেশে নিধেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিং করা হচ্ছে। যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

&dquote;&dquote;শিক্ষার্থীদের বহনের গাড়ি বন্ধ থাকলেও বাধা উপেক্ষা করে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে সকাল থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে আকটকৃত সকল শিক্ষার্থীকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। সকল বৈষম্য দূর করে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির মান দিতে হবে। এছাড়া এ সকল দাবি না মেনে নিলে আমরণ অনশন অব্যহত থাকবে।

বিশ্ববিদ্যারয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী এ বিষয়ে বলেন, ‘গতকাল একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পিছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ দুই জেলার প্রশাসন এবং গোয়েন্দাদের সাথে কথা বলা হচ্ছে।’

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: