বিরতিহীন আন্তঃনগর ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধন আজ

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:২৫ এএম

অবশেষে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হতে যাচ্ছে দেশের কাঙ্ক্ষিত তৃতীয় বিরতিহীন আন্তঃনগর বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন। শুক্রবার ব্যতীত সপ্তাহের প্রতিদিন ট্রেন টি ঢাকা-রাজশাহী রুটে পৌনে ৫ ঘণ্টায় আসা-যাওয়া করবে। তবে এই প্রথম এ ট্রেনটিতে বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ট্রেনটি উত্তরাঞ্চলের প্রথম দ্রুতগামী বিরতিহীন আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটির উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিকভাবে ট্রেনটি নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু করবে শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে।

জানা গেছে, নতুন এই ট্রেনটিতে থাকছে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১২টি নতুন বগি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের বগি ৭টি, যার আসনসংখ্যা ৬৬৪টি। ২টি এসি বগিতে আসন থাকবে ১৬০ টি। ট্রেনটিতে মোট আসনসংখ্যা ৯৪৮। ভারত থেকে ২০১৩ সালে আমদানি করা দুটি ইঞ্জিন দিয়ে চলাচল করবে ট্রেনটি।

ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭ টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ১ টা ১৫ মিনিটে এবং রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধা ৬টায়। ট্রেনে ৮৭৫ টাকা এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার ৫২৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই টাকার মধ্যেই খাবারের টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে এই ট্রেনটি চলতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধনের পরে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রেলমন্ত্রী ও যাত্রীদের নিয়ে রওনা হবে। তবে এ যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো টিকিটের মূল্য নেওয়া হচ্ছে না এমনকি ঢাকা থেকে ফেরার পথেও বিনামূল্যে ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।

উদ্বোধন উপলক্ষে ট্রেনটি ফুল আর রঙিন কাপড় দিয়ে সাজানো হয়েছে।

এদিকে রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচসমূহের অন্যতম নতুন বৈশিষ্ট্য হল-বায়ো-টয়লেট সংযোজন। ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রিদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে প্রসস্থ দরজা (মেইন ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টীলের তৈরী এবং অত্যাধুনিক যাত্রি সুবিধা স্বম্বলিত। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইন এর ব্যবস্থা রয়েছে।

আধুনিক এই ট্রেনে রয়েছে অটোমেটিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি লাইট, অযুখানাসহ নামায ঘর। সুইং ডোর এর পরিবর্তে নিরাপদ স্লাইডিং ডোর ব্যবহার করা হয়েছে এতে। যাত্রী সাধারণের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার, মোবাইল চার্জার এর ব্যবস্থা রয়েছে। রুফ রাইডার কর্তৃক পথিমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রেন থামানো রোধে ট্রেনটিতে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে অ্যালার্ম চেইন পুলিং সিস্টেম। খাবার গাড়ির অত্যাধুনিক ডাইনিং সুবিধাদি রয়েছে গাড়ীটিতে।

ট্রেনের ভাড়া একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০ ভাগ বেশী আরোপিত হবে। এছাড়া এই ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) দ্বারা খাবার সরবরাহ করা হবে।

বর্তমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে মোট তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু আছে। এগুলো হলো- পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস। শুরুতে এসব ট্রেন যেক’টি স্টেশনে থামতো, এখন তার চেয়ে অনেক বেশি স্থানে থামছে। বর্তমানে ১৪টি স্টপেজ রয়েছে আন্তঃনগর এই ট্রেনগুলোর।

বিডি২৪লাইভ/এসএএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: