মৃত্যুর আগে সহপাঠীদের শেষ যা বলেছিলেন লাবণ্য

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪৬ পিএম

মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে ছিল সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে মারা যাওয়া ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১)। ক্লাসে সে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলতো। শুধু তাই নয়, লাবণ্য ছিল অনেক মেধাবী ছাত্রী।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। এরপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্সে ভর্তি হয়।

লাবণ্যের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রাজধানীর শ্যামলীর বাসা থেকে নিচে নামেন লাবণ্য। ক্লাস ১২টায় হওয়ায় দ্রুত যেতে হবে বলে রাইড শেয়ার উবারের একটি মোটরসাইকেলে চড়ে রওনা হন।

লাবণ্য বাইকে চড়ার ৩০ মিনিট পর তাকে বহন করা মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয় একটি কাভার্ড ভ্যান। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান লাবন্য। বেলা ১১ টার দিকে শেরেবাংলা নগরের হৃদরোগ হাসপাতালের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিমিষেই শেষ হয়ে যায় লাবণ্যের স্বপ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর যাওয়া হয়নি ফাইনাল পরীক্ষার খাতা দেখতে।

জানা যায়, লাবণ্যের বাবা এমদাদুল হক একজন ব্যবসায়ী। লাবণ্যের ছোট ভাই এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। লাবণ্য বরাবরই ভালো ছাত্রী ছিলেন, তাই মা-বাবা মেয়েকে ভর্তি করান কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। বাবা-মার প্রত্যাশা অনুযায়ী লাবণ্যও নিয়মিত ভালো ফলাফল করে আসছিলেন। কিন্তু মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় হঠাৎ করে লাবণ্যের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে তার পরিবার।

লাবণ্যের দুর্ঘটনার কথা শোনে সঙ্গে সঙ্গে সহপাঠীরা ভিড় জমান সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে। তারা অবস্থান নিয়ে সেই উবার চালকের গ্রেফতারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে লাবণ্যের এক সহপাঠী বলেন, ‘দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও লাবণ্যের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছিল। সবাই তখনো ফাইনাল পরীক্ষার খাতা দেখানোর বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলাম। কিন্তু এর মধ্যেই যে লাবণ্যকে সারা জীবনের জন্য হারিয়ে ফেলব, তা ভাবতেও পারেনি।’

লাবণ্য সবার মধ্যমণি ছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘লাবণ্য আমাদের ভার্সিটির আড্ডার মধ্যমণি ছিল। সে পড়ালেখায় যেমন ছিল, তেমনি সবার সঙ্গে হাসিখুশি মিশত। তার এভাবে চলে যাওয়া আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে ফেলেছে। কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: