কত টাকায় বিক্রি হয়েছে নুসরাতের জীবন?

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:১৪ পিএম

চাঞ্চল্যকর নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় স্থানীয় কয়েক সাংবাদিক ও পুলিশের মধ্যে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, নুসরাতের হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শুরু থেকেই মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা, স্থানীয় কয়েক সাংবাদিক ও পুলিশের মধ্যে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেই সঙ্গে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রাথমিক কিছু তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর সোনাগাজী থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হবে জড়িতদের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নুসরাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তদন্তের অংশ হিসেবে সোনাগাজীর প্রাক্তন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেনীর সোনাগাজী যাচ্ছে সিআইডির তদন্ত দল।

মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, নুসরাতের সঙ্গে এই ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুসন্ধান করা হবে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই অর্থ লেনদেনের সংস্পর্শে এসেছে তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব।

মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে বুঝাতে গিয়ে মোল্যা নজরুল আরও বলেন, নুসরাতকে শ্লীলতাহানি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা, হত্যার উদ্দেশ্যে কেনা কেরোসিন বা এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে যেকোন ইনভেস্টই মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়বে।

এদিকে সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচারের জন্য লাখ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে এই অর্থ সরবরাহ করা হয়েছে। তারা নুসরাতের শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আর্থিকভাবে লাভবান ব্যক্তিদের তালাশ করছেন। সিআইডির অনুসন্ধান টিম ঘটনায় অভিযুক্তদের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব খুঁজছে।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর অবস্থায় রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ৮ জন আসামির সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পিবিআই।

এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। নুসরাত চিকিৎসকদের কাছে দেওয়া শেষ জবানবন্দিতে বলেছিলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা পাঁচজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

বিডি২৪লাইভ/এইচএম/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: