কলকাতা থেকে মাত্র ৯০০ কিলোমিটার দূরে ফণী

প্রকাশিত: ০২ মে ২০১৯, ১১:৪৭ এএম

বুধবার রাতে রাজ্যের দিকে বাঁক নিয়েছে ফণী। ১ মে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে ক্রমে উত্তর দিকে এগিয়ে গিয়েছে পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী হয়ে ওঠা ফণী। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে কলকাতা থেকে ৯৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম এবং পুরীর ৫৪০, কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম, দীঘার ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থান করছে। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম কলকাতা২৪।

মঙ্গলবার রাতে ঝড়ের অবস্থান ছিল দক্ষিণ – পশ্চিম ও দক্ষিণ – পূর্ব ১২.৬ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৫.৭ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে, যা পুরী থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে এবং ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিম অন্ধ্রের কাছে। শ্রীলঙ্কার ত্রিনকোমালির ৬৬০ কিলোমিটার উত্তর এবং উত্তর পশ্চিমে। সেটাই বুধবার প্রায় মাঝ রাতে বাঁক নিয়েছে রাজ্যের উপকূলের দিকে।

৩ মে সেটি দক্ষিণ পুরীর দিকে চলে আসবে। তখন এর গতিবেগ হতে পারে সর্বোচ্চ ২০৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ৫ মে পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলবে সাগর উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং সংলগ্ন শহর গ্রামে। পয়লা মে , ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে দক্ষিণবঙ্গে। পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ২ মে ফণীর প্রভাব আরও প্রকট হবে পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূলবর্তী জেলায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। যা চলবে টানা ৩ তারিখ অবধি। এদিন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টিপাত হবে।

ইতিমধ্যেই ভারী সতর্কতা জারি করা হয়েছে সাইক্লোনের প্রত্যেকটি সম্ভাব্য পথেই। পাশাপাশি ভারতীয় কোস্ট গার্ডকে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাইক্লোন ফণীর কারণে কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্মকর্তাদের বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন।

ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি যাতে যথাসম্ভব কম হয়, সেই বিষয়ে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি পি কে সিন‌্‌হার নেতৃত্বে এ দিন একাধিক বার বৈঠকে বসে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি। বিপর্যয় মোকাবিলায় উপকূলবর্তী রাজ্যগুলির জন্য ১০৬৮ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ ২৩৫.৫০ কোটি। চার রাজ্যে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে। ওড়িশায় প্রস্তুত থাকছে ২৮টি দল। অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে যথাক্রমে আট এবং পাঁচটি দল মোতায়েন করা হবে। সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, নৌসেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও।

২০১৩ সালে দুর্গাষ্টমীর রাতে ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার বেগে ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল ভয়াল ঘূর্ণিঝড় পাইলিন। অনেকে তার সঙ্গে ফণীর তুলনা টানতে চাইলেও মৌসম ভবনের ঘূর্ণিঝড় বিভাগের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রের বক্তব্য, এ বারের ঘূর্ণিঝড় পাইলিন নয়, হুদহুদ-এর চেহারা নিতে পারে। ২০১৪ সালের অক্টোবরে হুদহুদের হানায় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বিশাখাপত্তনম শহর।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: