‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুলনার ভোটারদের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ তামাশা’

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৮, ০২:০০ পিএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- ‘সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের ফলেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে খুলনার মানুষের সমর্থন মিলেছে। আর যারা গত ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন, এমন সুষ্ঠু নির্বাচন দেশে কবে হয়েছে?’

তিনি বলেন, ‘ভোটারবিহীন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুলনার ভোটারদের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ তামাশা। অবৈধ ক্ষমতার দৌরাত্ম্যে ভোটারদের অধিকার বঞ্চিত করে এখন তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছেন। কারণ শেখ হাসিনার নতুন মডেলের ‘চমৎকার’ খুলনা সিটি নির্বাচনে অর্ধেকেরও কম ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি, কেন্দ্রে গিয়েও ভোট দিতে পারেনি হাজার হাজার ভোটার।’

সোমবার (২১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘যে নির্বাচনের পর লজ্জায় আজও নির্বাচন কমিশন কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিতে পারেনি। যে নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও কারচুপির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। যে নির্বাচনে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জাল ভোট প্রদানসহ নানা অনিয়মের তদন্ত দাবি করছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন সহযোগি প্রতিষ্ঠানগুলো। যে নির্বাচনে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র বাবার সঙ্গে ভোট দিতে পারে, মরা মানুষ ভোট দিতে পারে, সন্ত্রাসীরা কেন্দ্র দখল করে লাইন ধরে সিল মারতে পারে সে নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছসিত প্রশংসায় এটাই প্রমানিত হলো যে, ভোট ডাকাতির হুকুমদাতা সরকারের শীর্ষ নেতারা।’

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। তারা দলীয় মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে রকম নিয়ম, তাতে আমাদের হাত-পা বাঁধা।’ 

আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দ্যেশে বলতে চাই- নির্বাচন কমিশনে আপনাদের পছন্দের লোকজনদেরকে ঢুকিয়ে সুষ্ঠু ভোট যাতে না হয় সেজন্য হাত-পা বেঁধে দিয়েছেন।’

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘ইসি খুলনাতে সরকারে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে মাত্র। ইসি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্বর্ণালী বাহিনী নন বরং এখন তারা ‘খাঁচায় পোরা তোতা পাখি’। সরকার তার কর্তৃত্ব সম্প্রাসারণ করে ইসিকে কব্জায় নিয়েছে। খুলনার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ভোট সন্ত্রাসের এক অভিনব নতুন মডেলের নির্বাচন যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি খারাপ নজির সৃষ্ঠি করল।’

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, যে নির্বাচনে বিএনপির সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের অধিকার হরণ করে তাদের হাত-পা বেঁধে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চেপে ধরে আওয়ামী লীগকে জয় আদায় করে দিতে সক্ষম হয়েছে নির্বাচন কমিশন।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমপি-মন্ত্রীরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে না, এটা যে কতটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার তার আরও একটি উদাহারণ হলো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে গতকাল গাজীপুরের টঙ্গিতে এক স্থানীয় এমপির বাসায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপির সভাপতিত্বে এমপি মন্ত্রীদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড.আব্দুর রাজ্জাক এমপি, কর্ণেল ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, ডা. দিপু মনি এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপিসহ মন্ত্রী এমপিরা। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এ ঘটনায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নিয়ে ক্ষমতাসীন মহলের এক গভীর নীলনকশার বিভৎস আভাস ফুটে ওঠছে।


বিডি২৪লাইভ/এএইচআর
 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: