আতঙ্কে মাদক ব্যবসায়ীরা, বাঁচতে আদালতে আত্মসমর্পণ!

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০১৮, ০১:১৬ পিএম

দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযানে দিনাজপুরে দুই মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর থেকে দিনাজপুরে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীরা নিজের জেলা ত্যাগ করার পাশাপশি আদালতে আত্নসমর্পণ করতে শুরু করেছে। অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

পুলিশ প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, দিনাজপুরে মাদকের যে তালিকা রয়েছে সেই তালিকার শীর্ষ স্থানে যাদের নাম, রয়েছে তাদের মধ্যে দিনাজপুর শহরের উপশহর ষ্টাফ কোয়াটার মোড়ের পূর্ব গেটে নতুন ৬ নং ব্লকের মোস্তফাগাজির স্ত্রী সুফিয়া বেগম(৫০) এর নাম রয়েছে। সোমবার (২১ মে) দিবাগত মধ্যরাতে দিনাজপুরে খবর ছড়িয়ে পড়ে শহরের পুলহাট এলাকার জনৈক আরমান ও সুফিয়া বেগম পুলিশেল সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। যা ছিল পুরো গুজব।

সোমবার (২১ মে) সকালে খবর পাওয়া যায়, যাদের নাম ছড়িয়ে পড়েছিল তাদের একজনও নয়, বিরামপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে মোঃ প্রবল হোসেন(৩৫) নামে একজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এর আগে রবিবার দিবাগত রাতে বিরলইপজেলার তেঘরা নারায়পুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী গলাকাটা বাবু (৪৮) পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।

এই ঘটনার পর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের মদ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীরা নিজের জেলা ত্যাগ করার পাশাপশি আদালতে আত্নসমর্পণ করতে শুরু করেছে। অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আতংকিত হয়ে পুলিশের তালিকা অনুযায়ী শীর্ষ স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের একজন সুফিয়া বেগম গোপনে আদালতে এসে আত্নসমর্পণ করেন।

আদালতে খবর নিয়ে যানা যায়, জিআর ৩৪৯/২০০২ সালের মোক্কদম্ নং ১৫১/২০০২ মাদক মামলায় সহকারী জজ আদালত-১ সুফিয়া বেগম ও মিজানুর রহমানকে ২০০৪ সালে দুই জনকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এরপর তারা মামলাটি দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। দায়রা জজ আদালত মামলাটি অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২ এ বদলি করেন।

সেখানে শুনানী শেষে বিচারক গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি দুই বছরের সাজা বহাল রাখেন। সেই থেকে তারা পলাতক ছিল। মঙ্গলবার (২২ মে) সুফিয়া বেগম জীবণ বাঁচানোর কৌশল হিসাবে সেই মামলায় যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক মুকার শিপন মোদকের আদালতে আত্নসমর্পণ করে। আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আদালতে পেশকার ফরিদ হোসেন জানান সুফিয়া বেগমকে জেল হাজতে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, সুফিয়া বেগম মাদক বিক্রি করবেনা বলে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে কমিউনিটি পুুলশের এক বিশাল সমাবেশে মাদক বিক্রি করবেনা বলে পুলিশের খাছে আত্নসমর্পণ করেছিলেন। এরপরও সে মাদক ব্যবসা বিভিন্ন কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছিল।

এ সময় আদালত চত্তরে অনেক মাদক ব্যবসাযী ও সেবনকারীদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কঠোর নিরাপত্তার জন্য কোন ফটো সাংবাদিক ছবি তুলতে পারেননি।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ীরা আতংকে জীবণ বাঁচাতে ও গ্রেফতার এড়াতে মাইগ্রেণ শুরু করেছে। এক জেলার মাদক ব্যবসায়ীরা আরেক জেলায় গিয়ে অবস্থান করছে। ফলে অনেককে গ্রেফতার করা যাচ্ছেনা। অনেকে ভারতে পাড়ি দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পুলিশের দেয়া এক তথ্য অনুয়াযী দিনাজপুরে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তবে সেবনকারীর কোন পরিসংখ্যান পুলিশের কাছে নেই।

 

বিডি২৪লাইভ/এমআরএম

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: