কুরবানির পশুর বয়সসীমা

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০১৮, ১১:৩৮ পিএম

ঈদুল আযহা বা ঈদুল আজহা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দু’টো ধর্মীয় উৎসবের একটি। বাংলাদেশে এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামে পরিচিত। ঈদুল আযহা মূলত আরবী বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব। আসলে এটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল কোরবানি বা জবাই দেয়। ইমাম আওযায়ী, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানীফা রহ. প্রমুখের মতে কুরবানি করা ওয়াজিব।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানির এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওই সব পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে, যা আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন’। (সুরা হজ : আয়াত ৩৪)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার নবীকে কুরবানি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন- ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুণ ও কুরবানি করুণ’। (সূরা কাওসার : ২)

কুরবানির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল কোরবানি বা জবাই দেয়।

হযরত মুহাম্মদ (সা.) চার ধরনের ত্রুটিপূর্ণ পশু কোরবানি দিতে নিষেধ করেছেন: দৃষ্টিহীন (বা এক চোখ অন্ধ), রুগ্ণ, সম্পূর্ণভাবে খোঁড়া ও এতটাই শীর্ণকায় যে তার অস্থিতে অস্থিমজ্জা নেই।

তখন সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘আমরা তো দাঁত, কান, লেজে ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাও কোরবানি দিতে অপছন্দ করি। জবাবে, নবীজি বললেন, যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পারো; তবে তা অন্যের জন্য হারাম করো না’।- সহিহ্ ইবনে হিব্বান ৫৯১৯, আবু দাউদ ২/৩৮৭, তিরমিজি ১/২৭৫।

কুরবানির পশুর বয়সসীমা

উট কমপক্ষে ৫ বছরের, গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয় এবং অবশ্যই ৬ মাসের বেশি হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানি করা জায়েয। ছাগলের ক্ষেত্রে ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানি জায়েয হবে না।

নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তোমরা দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত উঠা (মুসিন্না) পশু ব্যতীত জবেহ কর না। তবে কষ্ট হলে ভেড়ার জাযআ তথা ছয়মাস বয়সের ভেড়া জবেহ করতে পার’। (ছহীহ মুসলিম)

ইসলামের বিভিন্ন বর্ননা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তাআলা ইসলামের নবী হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেন। এই আদেশ অনুযায়ী হযরত ইব্রাহিম (আঃ) তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার জন্য প্রস্তুত হলে স্রষ্টা তাকে তা করতে বাধা দেন এবং পুত্রের পরিবর্তে পশু কুরবানীর নির্দেশ দেন।

এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি পালন করে। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহা চলে। হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সবোর্চ্চ ৭০ দিন হতে পারে।


বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: