ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালু নিয়ে জটিলতা 

প্রকাশিত: ১৭ আগষ্ট ২০১৮, ০৯:০৮ পিএম

হারুন-অর-রশীদ,ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর শহরে নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালু করা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চালু করা যাচ্ছেনা প্লান্টটি। ফলে বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শহরবাসী।তাই পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী সহসাই নিরাপদ পানি সরবরাহ করা এখনই সম্ভব হচ্ছে না।

ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় শেখ রাসেল পৌর শিশুপার্কে পাশে এই ওয়াটার প্লান্টটি নির্মাণ করা হয়। ৩৭ শহর পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতার ২০১৩ সালে প্লান্টটির নির্মাণ কাজ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। এ প্লান্টটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া মাত্র প্লান্টটি চালু করা হবে। যার সুফল ভোগ করবে ফরিদপুর শহরের বৃহৎ জনগোষ্ঠী। আর এই বিদ্যুৎ সংযোগে বাদ সেজেছে পরিবেশের ছাড়পত্র।

ফরিদপুর শহরে প্রতি দিন প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ গ্যালন চাহিদার বিপরীতে পানি সরবরাহ হচ্ছে ১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন।পানির এই সঙ্কট নিরসন কল্পে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির নির্মাণ কাজ ২০১৩ সালে শুরু হয়ে চলতি বছরের জুন মাসে সম্পন্ন হয়।

ফরিদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল জানান, প্লান্টটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। প্লান্টটি চালুর পর ভুগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে তা ছয়টি স্তরে পরিশোধন করে সরবরাহ করা যাবে। তিনি বলেন, এ প্লান্ট থেকে প্রতি ঘন্টায় সাড়ে তিন লাখ লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্লান্টটি চালু হলে শহরে আর কোন পানির সংকট থাকবে না।

&dquote;&dquote;ফরিদপুর পৌর সভার মেয়র শেখ মাহাতাব আলী ওরফে মেথু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরবাসী বিশুদ্ধ পানির সমস্যার মধ্যে রয়েছে। আমরা পৌরবাসীর প্রতিদিনের পানির চাহিদা মেটাতে পারছি না। তবে এ প্লান্টটি চালু হলে পৌরবাসীর পানির এ সংকট দূর করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

মেয়র আরও বলেন, আমরা জানি প্লান্টটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছ থেকে এটি বুঝে নেওয়ার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেও ফেরেছি। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র না দেওয়ায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। ‘এটি তো কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান নয়’ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, পানির প্লান্ট চালু করতে কেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগবে তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।

তিনি বলেন, তারপরও আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছি ছাড়পত্রের জন্য। কিন্তু আমাদের ছাড়পত্র দিতে গরিমসি করছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ছাড়পত্রগত জটিলতা নিয়ে গত মাসে জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনাও হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের সংযোগ দিচ্ছে না।

ফরিদপুর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানী (ওজোপাডিকো) এর নির্বাহী প্রক্যেশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২) মো. মোরশেদ আলম জানান, গোয়ালচামট পানি শোধনাগারে সংযোগ পেতে পরিবেশ ছাড়পত্রের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজটি অগ্রগামী করা সম্ভব হচ্ছে না।তবে জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় আমাদের সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে, ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আমরা অতি দ্রুত সংযোগ দিতে পারব।

ফরিদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বলেন, যেহেতু প্লান্টের পানি জোগান ভূগর্ভস্থ পানি এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন। কেননা ভূগর্ভস্থ পানি পারিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরেজমিনে প্লান্টটি পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে ছাড়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করে ঢাকায় আমাদের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: