ইবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঈদের স্মৃতি ও ভাবনা

প্রকাশিত: ১৯ আগষ্ট ২০১৮, ০৮:৪৩ পিএম

ঈদ মানেই খুশি আর আনন্দ। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়ানো। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ আপনজনদের সঙ্গে মিলন মেলা। দিনটিকে নিয়ে সত্যি যেন সবার মধ্যে কিছু চিন্তাধারা, পরিকল্পনা কাজ করে। চিন্তা-পরিকল্পনা একে অপরের থেকে ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই আনন্দ, হাসি খুশির মধ্য দিয়ে দিনটিকে উপভোগ করা।

তেমনই এবারের ঈদুল আজহার ঈদকে নিয়ে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থীরা। প্রতিবেদকের কাছে দেওয়া সেসব ভবনা ও স্মৃতির কথা তুলে ধরা হলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম তার ঈদের স্মৃতির কথা উল্লেখ কওে বলেন, কোরবানির ঈদ বরাবরই আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। ছোটবেলায় খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম। আমরা সমবয়সী বন্ধুরা সবাই একসঙ্গে হয়ে সুযোগ খুঁজতাম কার ডাবগাছে হানা দেওয়া যায়! আর ঈদের দিন নামাজ শেষে ছুটে চলে আসতাম গরু কাছে।

আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মু. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ঈদে আমার প্রিয় কাজ মায়ের হাতের স্পেশাল খিচুড়ি, ডিম ভাজা ও লাচ্ছা সেমাই খেয়ে নামাজ পড়তে যাওয়া। অতঃপর এসে কোরবানির গরু নিয়ে সারাটা বেলা পার করা। এবারের ঈদে ছুটি কম হওয়ার হতাশা রয়েছে। তার উপর ভার্সিটি খোলার পরই ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। অনেক চাপের ভেতর দিয়ে যাবে এবারের ঈদ।

ঈদের স্মরণীয় অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একবারের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আমাদের ষাড়টির জবেহ ঠিকমতো হয়নি, তাই সেটি উঠে সেকি ছোটাছুটি! তখন সবাই চিৎকার করে সারা বাড়ি মাথায় নিয়েছেন। শেষে আবার ষাড়টিকে জবেহ দিতে হয়েছে।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মুন বলেন, আমার ঈদ স্মৃতি খুব অসাধারণ কিছু না হলেও অনেক আনন্দের। ঈদের আগের রাত মানেই দু'হাত ভরে মেহেদি দেওয়া, ভাই-বোনদের সঙ্গে আতশবাজি দেখা। ঈদের সকালে নতুন জামা পরে সব ভাই-বোনদের সঙ্গে মেলা দেখতে যাওয়াটা আরও বেশি আনন্দের। আর মেলা দেখার পর শুরু হয় বড়দের সালাম করে তাদের কাছে থেকে সালামি নেওয়ার পর্ব।

ঈদের স্মৃতি ও ভাবনার কথা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও লেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ঈদ মানে খুশি আর আনন্দের সমাহার। পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে সেই খুশি আর আনন্দের বহি:প্রকাশ ঘটে। প্রতিবার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করলেও এবার পরিবার নিয়ে কুষ্টিয়াতে ঈদ করার ইচ্ছা আছে। ক্যাম্পাসে যেহেতু ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সেহেতু ক্যাম্পাসেই ঈদের নামাজ আদায় করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা তার ভবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগেও ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করেছি। ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপনের এক অন্যরকমের অনুভূতি রয়েছে। এখানে ঈদ করলে মনে হয় যেন, নিজের পরিবারের সাথেই ঈদ করছি। ঈদের নামাজ শেষে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, কলিগ ও গরীব দুস্থদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা ইচ্ছে আছে।

জানা যায়, ঈদের সময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষকদের বেশি সংখ্যক ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ ক্যাম্পাসে ঈদ করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় এই ঈদের জামাত। ঈদের জামাত শেষে ক্যাম্পাসের পার্শবর্তী এলাকাসহ কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ থেকে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ঘুরতে আসে এই সবুজ প্রাঙ্গণে। ঈদকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণির এসব মানুষের উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসে তৈরির হয় এক আনন্দঘন পরিবেশ।

উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদুল আজহার জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা এই জামাতে নামাজ আদায় করবেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্র এবং পার্শবর্তী এলাকার লোকজনকে ঈদের জামাতে অংগ্রহনের জন্য মসজিদ কর্তৃপক্ষ থেকে আহবান জাননো হয়েছে। ঈদের জামাত শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ, দেশ ও জাতি এবং ইসলামী বিশ্বদ্যিালয়ের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: