কৌতুক নয় বাস্তবতা: বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে গরুর ‘আবাসিক হোটেল’
গরুর জন্য ‘আবাসিক হোটেল’- শুনতে কৌতুকপূর্ণ মনে হলেও সেরকম ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় যমুনা নদীর পাড়ে স্থানীয় গোবিন্দাসী গরুর হাটকে কেন্দ্র করে। প্রায় পঞ্চাশ বছরের পুরোনো এ গরুর হাটটি সপ্তাহের প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে । এ খবর দিয়েছে পার্সটুডে।
যমুনা নদীপথে নৌকাযোগে এবং সড়কপথে ট্রাকযোগে দূরের জেলা থেকে গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি গবাদি পশু বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসে পাইকারেরা। আর এসব গবাদি পশু কেনার জন্য পাশ্ববর্তী জেলা থেকে আসে ব্যবসায়ীরা। গবাদি পশু বিক্রির জন্য পাইকারদের কখনো পরের হাটবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার দূরের জেলার পাইকারী ক্রেতাদেরও গবাদি পশু কিনে তা ট্রাক বোঝাই করে গন্তব্যে রওনা দেওয়ার আগে ওই রাতে অপেক্ষা করতে হয়। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের গরু-ছাগল নিয়ে হাটের বাইরে গ্রামের পথে ঘাটে বা খোলা স্থানে রাত পার করা ছাড়া উপায় ছিল না।
এ কারণে ধীরে ধীরে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে একটা ব্যবসায়িক সমঝোতা গড়ে ওঠে। কম খরচে ব্যবসায়ীদের থাকা এবং তাদের গবাদি পশুকে খাদ্য ও পানি সরবরাহ এবং নিারাপদে রাত কাটানোর সুবিধা করে দিতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র গ্রামবাসীরা তাদের বাড়ীর আঙ্গিনায় টিনের ছাউনি দিয়ে গোয়ালঘড় বানিয়ে দেয়। পাশেই গরু ব্যবসায়ীদের থাকার ব্যবস্থা হয়। এ ব্যবস্থাটিই গরুর আবাসিক হোটেল বা বোর্ডিং হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
এ সব হোটেলে রয়েছে গরু-মহিষের গোসল এবং গরু ও গরুর মালিকদের জন্য তিন বেলা খাবারের আলাদা জায়গা। রয়েছে মশা, মাছি থেকে রক্ষার মশারির ব্যবস্থা। কিছু হোটেলে রয়েছে বৈদ্যুতিক সিলিং ও টেবিল ফ্যানের ব্যবস্থা। প্রতিটি গরুর জন্য প্রতিদিন ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়।
গোবিন্দাসী গরুর হাটের চারপাশে গত কয়েক দশকে গড়ে উঠেছে শতাধিক পশুর আবাসিক (বোর্ডিং) হোটেল। এলাকার কয়েকশ' পরিবারের মানুষের বিশেষ পেশায় পরিণত হয়েছে গরুর হোটেল ব্যবসা।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ মজনু মিঞা রেডিও তেহরানকে জানান, তার এলাকায় অবস্থিত এ হাটে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ ও ভুটান থেকেও গরু-মহিষ আমদানি হয়। প্রতি হাটবারে লক্ষাধিক গবাদি পশু বিক্রি হয়। এ উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ীর সমাগম হয় ।
মজনু মিঞা জানান, গোবিন্দাসী হাটকে কেন্দ্র করে গরুর 'আবাসিক হোটেল' ব্যবস্থা চালু থাকার ফলে দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরাও উপকৃত হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে কেনা-বেচা করে নিরাপদে ফিরে যেতে পারে তার নিশ্চয়তা রয়েছে এখানে। স্থানীয় একজন 'গরুর হোটেল' মালিক জানালেন, খুব কম খরচে তারা এ সেবা দিচ্ছেন, বিনিময়ে তারা নিজেরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
ওদিকে, যশোরের কেশবপুরে স্থানীয় গরুর হাটকে কেন্দ্র করে একই ধরণের গবাদি পশুর বোর্ডিং চালু করেছেন আবদুস সোবহান নামের স্থানীয় এক গ্রামবাসী। কয়েকবছর আগে ১০-১২টি গরু রাখার মতো “বোর্ডিং” চালু করেন তিনি। এখন তার বোর্ডিং-এ শ’দুয়েক গরুকে আবাসিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
বিডি২৪লাইভ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: