‘শহীদুলের মুক্তির দাবি’ যা বললেন ইনু

প্রকাশিত: ২৭ আগষ্ট ২০১৮, ১১:০৬ এএম

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের মুক্তির দাবি জানিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ যারা বিবৃতি দিয়েছেন তারা প্রকৃত অবস্থা জানেন না বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তারা বাস্তবতা জানলে শহীদুল আলমের পক্ষে বিবৃতিও দিতেন না বলে মনে করেন মন্ত্রী।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে শহীদুল আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক এবং নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্বরা তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শহীদুল আলম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নামকরা যেসব ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন তারা বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত হননি। যারা বিবৃতি দিচ্ছেন তারা সঠিক অবস্থা জানলে হয়তো দ্বিতীয়বার চিন্তা করতেন বিবৃতি দেবেন কি না।’

ইনু বলেন, ‘জনাব শহীদুল আলম তিনবার প্রকাশ্যে সরাসরি টেলিভিশনে এসে এবং ফেসবুকে লাইভে এসে উনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে উস্কানি প্রদান করেছেন এবং উত্তেজনাকর কথাবার্তা বলেছেন, যা দেশের আইনের পরিপন্থী।’

শুধু শহীদুল আলমের বিষয়ে নয়, বাংলাদেশের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিরা যখন কোনো বিবৃতি দেয়, তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কোন চাপের মধ্যে পড়ে কি না?

এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু বিদেশিদের বিষয় নয়, দেশের অভ্যন্তরে যদি কোনো বুদ্ধিজীবী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা কোনো রিপোর্ট উত্থাপন করে তাহলে সরকার সেগুলো গ্রাহ্য করার চেষ্টা করে, কোনো চাপের মধ্যে পড়ে না।

&dquote;&dquote;‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হচ্ছে, সাজা হচ্ছে, তখনও বহু দেশের রাষ্ট্রপতি ফোন করে আমাদের অনুরোধ করেছে সাজা না দেবার জন্য।.... তারা একেবারে জঘন্য যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ওকালতি করেছেন। এতে মনে হয়েছে বহু সময় বিদেশিরা আমাদের দেশের বাস্তব আইনও জানেন না এবং যার সম্পর্কে বিবৃতি দিচ্ছেন তার অবস্থানও জানেন না।’

কিছু বিদেশি সংস্থা প্রায়ই বাংলাদেশ সম্পর্কে বিবৃতি দেয়, একথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কড়া সমালোচনা করেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের ‘বাস্তব অবস্থার তোয়াক্কা করে না’ বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর একই বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন, কাটিং অ্যান্ড পেস্টিং-এর মতো।’

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেগুলো খারিজ করে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে তিন হাজারের বেশি খবরের কাগজ প্রকাশিত হয় এবং ৪১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।

হাসানুল হক ইনু উল্লেখ করেন, ছাত্র বিক্ষোভের সময় শহীদুল আলম ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন। ছাত্র বিক্ষোভ সম্পর্কে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সে সময় নারী লাঞ্ছনা এবং হত্যাকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

‘মিথ্যা তথ্য দিলে তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনগত ব্যবস্থা কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে সেটা মত প্রকাশের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নয়।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: