ইসি মাহবুবের আপত্তিতে ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য’ দেখছেন কাদের

প্রকাশিত: ৩১ আগষ্ট ২০১৮, ১১:১৪ এএম

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারের আপত্তির বিষয়টিকে ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য’ হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য ছাড়া সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না বলে এতদিন বলে আসছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সুযোগ রাখার জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। বৈঠক করে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনও দিয়েছে। যদিও এতে ভিন্ন মত পোষণ করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

তবে অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে বৈঠক চালিয়ে যান সিইসি নূরুল হুদা।

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) সিলেট সার্কিট হাউজে এসব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের অবস্থানকে তিনি ‘কমিশনের জটিলতা’ বলে মনে করছেন না।

তিনি বলেন, ‘সিইসিসহ পাঁচজন কমিশনারের মধ্যে সবার মতামত যে এক হবে এমন তো কোনো কথা নেই। একজন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিতেই পারেন। ভিন্নমত থাকতেই পারে। এটাইতো ‘গণতন্ত্রের বিউটি’। এতে আমাদের কিছু বলার নেই।’

শুরু থেকেই ইভিএম নিয়ে বিএনপির আশঙ্কা, এই যন্ত্র নিয়ে কারচুপি করা সম্ভব আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতেই যন্ত্রটির ব্যবহারের চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন। যদিও চলতি বছর পাঁচ সিটি নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে কোনো বিতর্ক হয়নি, বরং ভোটাররা এই যন্ত্রকে তুলনামূলক ভালো বলেছেন। পাশাপাশি যেসব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে, সেগুলোতে কোনো গোলযোগই হয়নি।

তবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইভিএমে হেরে গেলে বিএনপির অযুহাত করার সুযোগ থাকবে না বলেই তারা এর বিরোধিতা করেছে।’

‘জনগণের ওপর যাদের আস্থা নেই, তারা অজুহাত খুঁজে বেড়ায়’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের চেয়েও বেশি দরকার নিরপেক্ষ ইলেকশন কমিশন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাদের দরকার নির্বাচনটা নিরপেক্ষ হবে কি না? নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তাদের ভয় কোথায়?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতেই আমরা ইভিএম সাপোর্ট করি। নির্বাচন সম্পর্কে মানুষের ‘খারাপ ধারণা’ দূর করতে ইভিএম দরকার। ইভিএম হচ্ছে আধুনিক ভোটিং পদ্ধতি।’

‘সিলেটেও বিএনপি দু’টি ইভিএমের কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে। তারা জিতলে মানবে আর হারলেই কারচুপির অভিযোগ তুলবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হতে পারবে না বলেই নানা অভিযোগ দিচ্ছে তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচন ২০১৮ সালে করার চেষ্টা করছে বিএনপি। তবে এই নীল নকশার নির্বাচন দেশে আর হতে দেওয়া হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশে আর আসবে না। নির্দিষ্ট একটা দলের জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপির অধিকার, সুযোগ নয়। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সরকার কোনো দলকে সুযোগ দেয় না।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: