ডেনমার্ক থেকে পাবনায় দম্পতি!

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:০৩ পিএম

শেকড়ের সন্ধানে পাবনায় এসেছেন এক ড্যানিশ দম্পতি। প্রথমে তারা বেড়ানোর কথা বললেও শেষে জানা যায় আসল ঘটনা। মিন্টো কার্টসটেন সনিক (৪৭) জানান, তেমন কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না থাকলেও প্রাণের টানে নিজ বাবা-মা ও স্বজনদের খোঁজে আমার পাবনায় আসা।

এ বিষয়ে পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শামিমা আকতার বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। পুলিশের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার করছি। ইতোমধ্যেই তিনি পাবনা সদর থানায় একটি এজাহারও করেছেন। তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশের গণমাধ্যমগুলোর মিন্টোর পাশে দাঁড়ানো দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জানা যায়, মাত্র ছয় বছর বয়সে পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাট এলাকা থেকে হারিয়ে যায় মিন্টো। এরপর ঢাকার ঠাটারীবাজার এলাকার চৌধুরী কামরুল হুসাইন নামে এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি শিশু সদনে আশ্রয় দেয়।

পরে সেখান থেকে ডেনমার্কের এক নিঃসন্তান দম্পতি মিন্টোকে দত্তক নিয়ে যায়। সেখানেই তার শৈশব-কৈশর কাটে, বিত্ত বৈভবের মাঝে লেখাপড়া শিখে বড় হন তিনি। মিন্টো পেশায় একজন চিত্র শিল্পী। ডেনমার্ক নাগরিক এনিটি হোলমি হেব নামের এক চিকিৎসককে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে।

জীবনের শুরুতে তেমন সমস্যার সৃষ্টি না হলেও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই সে সব সময় হীনমন্যতায় ভুগতেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খুবই দুর্ব্যবহার করতেন। মাঝে মধ্যেই মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেত, কোনো কিছুই ভালো লাগত না। অবশেষে পরিবারের সিদ্ধান্তে ড্যানিশ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ছোট বেলার একটি ছবিকে অবলম্বন করেই ছুটে আসে পাবনায়।

এ বিষয়ে মিন্টো বলেন, বিত্ত বৈভব আর প্রাচুর্যের মধ্যেও আমি সব সময় কেমন যেন একটি শূন্যতা অনুভব করতাম। আমি তাজা মাছের মতো পানির পরিবর্তে ডাঙ্গায় ছটফট করছিলাম। ৪১ বছর এমন যন্ত্রণায় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে অনেকের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করছি।

পাবনায় আসার পর এ ড্যানিশ দম্পতি শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। ১০ দিন ধরে পাবনা শহরসহ নগরবাড়ী এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন এই দম্পতি নিজ বাবা-মা কিংবা স্বজনদের খোঁজে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মিন্টু ১০ দিনেও খুঁজে পায়নি তার আত্মীয়স্বজনদের। সকালে হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে রাস্তায় রাস্তায় লিফলেট বিলি করছেন, নিজ স্বজনদের সন্ধানে। মিন্টু বাংলায় কথা বলতে না পারলেও বুকে হাত রেখে বাবা-মায়ের কথা বোঝাতে চায় এবং তাদের সন্ধান চায়।


বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: