খুবই মর্মান্তিক, বিয়ের ৪ মাসের মাথায় স্ত্রীকে...

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:১৮ এএম

জামালপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে।

নিহতের পরিবার জামালপুরের ৮ নম্বর বাঁশচড়া ইউনিয়নের ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ফারুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
 
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউ মারা যান শম্পা। গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন গৃহবধূ শম্পা।

খুবই মর্মান্তিক এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত শম্পার বাবা মো: খোকা মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- শম্পার স্বামী ফারুক হোসেন, শ্বশুর আবদুল হক, শাশুড়ি মোছা: সমস্ত বেগম ও ফারুকের বোন জামাই মো: রফিকুল ইসলাম। 

অভিযুক্ত স্বামী ফারুককে গ্রেফতার করলেও ওই ঘটনার পর থেকে বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

এ বিষয়ে গৃহবধূ শম্পার ভাগ্নে পলাশ জানান, নিহতের বাবা খোকা মিয়া পেশায় একজন কৃষক। খোকা মিয়ার ৪ মেয়ে ও ৩ ছেলের মধ্যে শম্পা ছিলেন সবার ছোট। পারিবারিকভাবে মাত্র ৪ মাস আগে ফারুক হোসেনের সাথে শম্পার বিয়ে হয়। 

তিনি আরও বলেন, খোকা মিয়ার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো না হলেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের সময় যৌতুকের সাড়ে ৩ লাখ টাকা জামাই ফারুকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সেই সুখ মেয়ে কপালে ধরা দেয়নি। বিয়ের মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই ফের যৌতুকের দাবিতে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন শম্পাকে নির্যাতন করতে থাকে।

এদিকে শম্পার স্বামী ফারুকের দাবি করেন, বিয়ের বেশ কিছুদিন তারা ভালোই ছিলেন। কিন্তু, বিয়ের হওয়ার পর মাস না পেরোতেই শম্পার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তিনি। শম্পা সংসারের প্রতি অমনোযোগী ছিল বলেও দাবি ফারুকের। এমন কি বাবার বাড়ি গেলে আর ফিরে আসতে চাইত না সে। সংসার জীবনের এসব বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় শম্পা ও তার মধ্যে। এর জেরে গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাগের মাথায় তিনি এক মিনিটের মতো শম্পার গলা টিপে ধরেছিলেন। এরপর ঘর থেকে বেরিয়ে যান ফারুক। পরে বাসায় ফিরে শম্পাকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে জামালপুরের নান্দিনা হাসপাতালে নেন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে শম্পাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন ফারুক।

শম্পার বাবা খোকা মিয়ার অভিযোগ, ফের যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত রোববার জামাই ফারুক সহ অন্য আসামিরা শম্পাকে প্রচণ্ড মারধর করে। এখানে ক্ষ্যান্ত থাকেনি  ঘাতকরা, একপর্যায়ে শম্পার গলা টিপে ধরে। এমন কি তারা ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়। এ সময় শম্পা অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঘর থেকে তুলে এনে উঠানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। 

পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শম্পাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন খোকা মিয়া।

জানা যায়, শুক্রবার রাতে জামালপুরের চরগজারিয়া ৩ নম্বর লক্ষিরচর ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানে শম্পার লাশ দাফন করা হয়েছে। মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন খোকা মিয়া।

এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: নাসিমুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটা হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের স্বামী ফারুককে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: