এন এস কলেজের ভবন সম্প্রসারণে তিন নম্বর ইট! 

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:০৯ পিএম

নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজে একটি ভবন সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহারের জন্য নিম্নমানের (তিন নম্বর) ইট আনা হয়েছে। জেলার সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজে ব্যবহারের অপেক্ষায় এমন ইট রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইটগুলো  সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল অধিদপ্তর দ্বারা পরীক্ষা করেই নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হবে। 

জানা যায়, ২০১৪ সালে কলেজ চত্বরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ভবন উদ্বোধনের পর উচ্চ মাধ্যমিক ও সম্মান শ্রেণির একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে কলেজের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য ওই ভবনে আরো দুইটি তলা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জুন মাস থেকে সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজের দিয়িত্ব পায় পাবনার প্রতিষ্ঠান মেসার্স খাদিজা এন্টারপ্রাইজ। কাজটি দুইদফা হাতবদল হয়ে আসে সাব-ঠিকাদার আব্দুর রহিমের কাছে। গত তিন মাস ধরে চার তলার ছাদ ও পিলারের কাজসহ প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকী আছে ইটের গাঁথুনি। 

শনিবার সকালে নিম্নমানের ইটগুলো আসে এন এস সরকারী কলেজে। ইটগুলো পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত নিজ ভাটা মুনসুর আলী এন্ড ব্রাদার্স ব্রিক ফিল্ড থেকে সরবরাহ করেছেন খাদিজা এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন নিজেই। 

নিম্নমানের ইটগুলো ভবন নির্মাণে ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, ভবন নির্মাণের উপকরণ নিম্নমানের হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। 

কলেজের ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, বঙ্গবন্ধু ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার কাজের জন্য রংচটা ও ভঙ্গুর ইট আনা হয়েছে। সেগুলো ব্যবহার হলে বর্ধিত ভবনের দেয়াল ধ্বসের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

কলেজের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শিক্ষকদের ফাঁকি দিয়েই ইটগুলো দেয়াল নির্মাণ কাজে ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে ঠিকাদারের লোকজন। এখনই এই তৎপরতা বন্ধ করা দরকার।’ 

&dquote;&dquote;

এন সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘আমি সভাপতি থাকার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণের দাবি করেছিলাম। সেই ভবন নির্মাণে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট। কলেজ চত্বরে কাজের জন্য ইটগুলো ফেলে রাখা হলেও কর্তৃপক্ষ নীরব রয়েছে। এই ইটে ভবন নির্মাণ করা হলে ঝুঁকিতে থাকবে শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে এসব সামগ্রী প্রত্যাহারের দাবি করছি।’

এ প্রসঙ্গে সাব-ঠিকাদার আব্দুর রহিম বলেন, ‘সরবরাহকৃত ইটে কোন সমস্যা নেই। তবে বৃষ্টিতে ধুঁয়ে যাওয়ায় দেখতে নিম্নমানের মনে হতে পারে। আমাদের সুনাম আছে, আমরা অনেক প্রতিষ্ঠানের কাজ করি। পরীক্ষা করে খারাপ প্রমাণিত হলে সেগুলো ব্যবহার করা হবে না।’

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ ফারুকুজ্জামান বলেন, 'ঠিকাদাররা সরবরাহকৃত ইট নিম্নমানের হলে আমরা কাজ শুরুর অনুমতি দেবো না। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি আমরা।’

এন এস সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুজ্জামান বলেন, ‘নিম্নমানের ইটের ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেননি। সরবরাহকারী ১ নম্বর ইট সরবরাহ করেছেন বলে জানি। তবে ইট ব্যবহার হবে কি-না, সে বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ নিশ্চয়ই করলেই দেয়ার নির্মাণের কাজ শুরু হবে।' 

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: