স্বামীর কাছে কলেজ ছাত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি পাঠাল প্রেমিক

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৪৯ পিএম

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা ফারজানা মিমি (ছদ্মনাম)। অনার্সে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে প্রেমে জড়িয়েছেন প্রতিবেশী যুবক আবু হানিফের (ছদ্মনাম) সাথে। মোবাইল ফোনে আলাপ, ফেসবুকে চ্যাটিং এবং ডেটিংয়ে শারীরিক সম্পর্ক সবই হয়েছে তাদের। দুজনের প্রেমের সময়ের মধ্যেই মিমির বিয়ের প্রস্তাব আসে। মিমির পরিবার বিয়েতে সম্মতিও দেয়। ওদিকে হানিফ তখনো বিয়ের জন্য প্রস্তুত নন। ফলে প্রেমিক-প্রেমিকা আলাপ-আলোচনা করে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের ইতি টানেন।

কিন্তু কিছু গোপন ছবি রয়েই যায় হানিফের কাছে। আর এ ছবিগুলো শেষ পর্যন্ত ডেকে আনে বিপদ। প্রকৌশলী রায়হানের (ছদ্মনাম) সঙ্গে বিয়ে হয় মিমির। নতুন জীবনের শুরুতেই দাম্পত্য হোঁচট খেয়ে প্রকৌশলী-মিমি দুজন দুদিকে ছিটকে পড়ে। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। কারণ হানিফের পাঠানো ছবি।

প্রকৌশলী রায়হানের ইনবক্সে মিমির বেশ কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে দেন হানিফ। এসব ছবি পাঠিয়ে প্রকৌশলী রায়হানকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, রায়হানের সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর সঙ্গে হানিফের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। ফলশ্রুতিতে নতুন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে বিয়ে ভেঙে যায়। ডিভোর্স হয় ওই দম্পতির।

এরপর পুনরায় মিমির ইনবক্সে যোগাযোগ শুরু করেন হানিফ। পুরনো প্রেমের সম্পর্ক নতুন করে শুরুর প্রস্তাব দিয়ে আরো জানিয়ে দেন, যদি তাঁর প্রস্তাবে রাজি না হয়, তাহলে মিমির যেখানেই নতুন করে বিয়ে হবে, সেখানেই এসব ছবি পাঠিয়ে বিয়ে ভেঙে দেবে। ডিভোর্সি মিমিকে হানিফ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘আমি ছাড়া তোমার কোনো গতি নেই।’

হানিফের এমন আচরণে পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। অথচ, বিয়ের আগেই মিমি হানিফের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন। সংসার ভেঙে দেওয়ায় অপমানিত মিমি নতুন করে হানিফের সঙ্গে সম্পর্ক শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ফলে মিমি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

সবশেষ আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিমির স্বজনরা। অভিযোগ পাওয়ার পর গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কথা বলেন মিমির সঙ্গে। এর পর গোয়েন্দা কার্যালয়ে ধরে আনা হয় হানিফকে।

হানিফ গোয়েন্দাদের জানান, মিমির সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটানোর পরও তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মিমির প্রকৌশলী স্বামীর কাছে নিজেদের অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে ভুল করেছেন। আবার মিমির সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নতুন করে সম্পর্ক শুরুর চেষ্টা এবং অন্য কোথায় বিয়ে হলে সেখানেও ছবি পাঠানোর হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অন্যায় হয়েছে মর্মেও স্বীকার করেন হানিফ।

প্রেমিকের সঙ্গে স্পর্শকাতর ছবি তোলে বিপদে পড়া মিমির বিষয়টি মীমাংসার পর নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তোলা যাবে না। আবেগের তাড়নায় এমন ছবি ধারণ করা মানেই নিজেকে বিপদে ফেলার আয়োজন করা। তাই সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

দায়ী হানিফের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক তথ্য পাওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে হানিফের বিরুদ্ধে মামলার জন্য অভিযোগকারীপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু মিমির পরিবার সামাজিক মর্যাদাহানির পর মিমির আত্মহত্যার বিষয়টি বিবেচনা করে মামলার পথে হাঁটেননি। তারা হানিফের পরিবারের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করেন।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: