২ মাসেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত স্কুল ছাত্রী 

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৫৭ পিএম

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ২ মাসেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত অষ্টম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী ডরিন (১৫)। সে উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের পদ্মনগর গ্রামের আলমগীর হোসনে বাদশার মেয়ে ও কৃপালপুর আবু আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। 

এ ঘটনায় ডরিনের পিতা আলমগীর হোসেন বাদশা বাদী হয়ে ২ জনের নামে ও অজ্ঞাত দুই/তিনজনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অপহৃতকে উদ্ধারে তৎপর নয় বলে অভিযোগ উঠেছে। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, কৃপালপুর আবু আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ডরিন গত ২১ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় তাকে জোর পূর্বক মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায় সাজন। সেই থেকে ডরিন নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় তার পিতা শৈলকুপা থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।

শৈলকুপা থানার মামলা নং-১৭ তাং ২১/০৮/২০১৮। ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০ (সেঃ শোধনী ০৩)এর ৭/৩০ ধারায়। মামলার আসামীরা হলো, পদ্মনগর গ্রামের বিদেশ প্রবাসী নজরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে সাজন (২৩) ও চররুপদাহ গ্রামের মৃত আঃ বারিক বিশ্বাসের ছেলে রান্নু (৪৫) সহ আরো ২/৩ জন।

ডরিনের পিতা আলমগীর হোসেন বাদশা জানান, তার মেয়ে ২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ধরে তার নাবালিকা মেয়েকে স্কুলে যাতায়াতের সময় চররূপদাহ গ্রামের সাজন মোল্লা প্রায় সময় উত্যক্ত ও বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। এ বিষয়ে সাজনের পরিবারকে অবহিত করা হলেও তারা কোন কর্ণপাত করেন না। এ বিষয়ে গ্রাম্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এরপরও সাজন প্রতিনিয়তই তার নাবালিকা মেয়েকে উত্যক্ত করেই আসছিলো। 

গত ২১ আগস্ট ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার সকালে তিনি বাড়িতে না থাকার সুযোগে লম্পট সাজন, ডরিন নিজ বাড়ি হইতে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তা হতে তার মেয়েকে মোটরসাইকেল যোগে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। 

তিনি আরো জানান, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মদদে ডরিনকে গুম করা হতে পারে। আসামিরা তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও ডরিনকে খুঁজে না পাওয়ায় তার মা পারভীন বেগম বাধ্য হয়ে ঝিনাইদহের আদালতে আরেকটি গুম-হত্যার মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

এ দিকে পুলিশ এজাহার ভুক্ত ২ নম্বর আসামি অপহরণকারীর মামা রানুকে গ্রেফতার করলেও সাথে সাথেই তিনি জামিনে মুক্তি পান। এছাড়া হাটফাজিলপুর ক্যাম্পের তৎকালীন ইনচার্জ এসআই খাইরুজ্জামান সাজনের চাচা ও তার মা সেলিনা বেগমকে গ্রেফতার করে মোটা অংকের টাকার বিনিমিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী আয়ুুবুর রহমান জানান, অপহৃত অষ্টম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী ডরিনকে উদ্ধারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আসামি গ্রেফতারসহ তাকে উদ্ধারের তৎপরতা অব্যাহত আছে।

ঘটনার সাথে সাজনের পরিবারের সম্পৃক্ততা থাকায় ঐদিনই তারা স্ব-পরিবারে গা-ঢাকা দেয়। অনেক খুঁজাখুঁজি করে মেয়েকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে বাদশা আইনের শরনাপন্ন হন। অসহায় পিতা বাদশা তার নাবালিকা মেয়েকে ফিরে পেতে আদালত ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন।  

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: