খাশোগি খুন, সৌদির মতো সুর বদলাচ্ছে তুরস্ক?

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:১৫ পিএম

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) স্বীকারোক্তি দেয়। তারা দাবি করে, গোয়েন্দা স্কোয়াডের সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তিনি নিহত হন। সৌদি আরব বলছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়াই ১৫ সদস্যের গোয়েন্দা স্কোয়াড নীতিবর্জিত অবস্থান থেকে খাশোগিকে খুন করেছেন।

ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর দাবি করেছেন, ওই গোয়েন্দা সদস্যরা ‘ভুলবশত’ খাশোগিকে খুন করার পাশাপাশি ঘটনাটি আড়াল করতে চেয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় দায়ীদের সাজা দিতে সৌদি আরব বদ্ধপরিকর।

এরপর খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে জার্মানি। জামাল খাশোগি হত্যাকার বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সৌদিকে আর কোনো অস্ত্র দেবে না দেশটি। রোববার (২১ অক্টোবর) এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির চ্যান্সেলর।

এরই এক পর্যায়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেন তিনি মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) পার্লামেন্টে জামাল খাসোগজিকে কিভাবে খুন করা হয়েছে - তার ‘নগ্ন সত্য’ প্রকাশ করবেন।

কিন্তু মঙ্গলবার পার্লামেন্টে দেয়া বিবৃতিতে তেমন কিছুই প্রকাশ করেননি তিনি।

এ সময় এরদোয়ান বলেছেন, তার কাছে জোরালো প্রমাণ রয়েছে যে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির মৃত্যু কোন দুর্ঘটনা নয়, বরং এক পরিকল্পিত অপারেশনের মাধ্যমেই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

‘মি. খাসোগির মৃতদেহ কোথায়, এবং কে তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছে’ - সৌদি আরবের কাছে তা জানতে চান মি. এরদোয়ান।

তিনি নিশ্চিত করেন যে এ ঘটনার ব্যাপারে সৌদি আরবে ১৮ জন লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, এই ১৮ জনকে ইস্তাম্বুলে এনে তাদের বিচার করতে হবে, এবং এ খুনে ভূমিকা রেখেছে এমন সবারই শাস্তি পেতে হবে।

তার এ বক্তব্যের পর ইস্তাম্বুল থেকে স্থানীয় সাংবাদিক সরোয়ার আলম বলেন, মি. এরদোয়ানের ভাষণে যে ধরণের তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপিত হবে বলে লোকের মনে আশা তৈরি হয়েছিল - সেরকম কিছু তিনি বলেন নি।

মি. এরদোয়ান বলেছেন, বেশ কিছুদিন আগেই এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে তা মি. এরদোয়ান প্রকাশ করেন নি।

এ ঘটনার অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং তুরস্কের হাতে আছে - এমন কথা তুর্কি কর্তৃপক্ষ আগে বললেও, মি. এরদোয়ান তার ভাষণে এরকম কোন কিছুর কথা উল্লেখ করেন নি।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগে তিনটি দলে ভাগ হয়ে ১৫ জন সৌদি নাগরিক পৃথক পৃথক বিমানে করে ইস্তাম্বুলে আসে। হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে এই দলটির কয়েকজন কনস্যুলেটের কাছে বেলগ্রাদ বনভূমিতে যায়।

গত সপ্তাহে তুরস্কের পুলিশ মি. খাসোগজির মৃতদেহের সন্ধানে ওই জায়গাটিতে তল্লাশি চালায়। খাসোগজি কনস্যুলেট ভবনে ঢোকার আগেই ওই ভবনের নিরাপত্তা ক্যামেরা এবং নজরদারির সব ভিডিও সরিয়ে ফেলে সৌদি নাগরিকদের দলটি।

এরদোয়ানের এমন মন্তব্যের পর এরই মধ্যে নানান আলোচনা- সমালোচনা শুরু করেছে বেশ কিছু গণমাধ্যম। প্রশ্ন উঠছে সৌদির মতো কি সুর বদলাচ্ছে তুরস্ক?

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: