প্রেম-বিয়ে, অতঃপর করুণ পরিণতি

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৩৪ পিএম

বিয়ের মাত্র তিন সপ্তাহের মাথায় শশুরবাড়ি থেকে এক নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই দম্পতি প্রেম করে বিয়ে করেছিল। এ ঘটনায় নিহতের শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে ফেনী শহরের বিরিঞ্চি এলাকায়।

নিহত গৃহবধূ বিরিঞ্চি এলাকার আতিকুল আলম সড়কের বাসিন্দা হাসনাত আরা রিম্পা। তার মা নাজমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে রিম্পাকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করে নোমান। তিনি অভিযোগ করেন রিম্পাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, এটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।

স্ত্রী নিহতের বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী নোমান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, রিম্পা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। ইতিপূর্বেও একাধিকবার আত্মহত্যা করতে সুইসাইড নোট লিখেছিল। গত ২৮ সেপ্টেম্বরও আত্মাহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। ওইদিনের একটি সুইসাইড নোট প্রচার করা হয়। ওই নোটে উল্লেখ রয়েছে- ‘আমি হাসনাত আরা রিম্পা, বাবা মো: শাহআলম মজুমদার এবং মা মাসুদা বেগম নাজমার ছোট সন্তান। আমি নিজ ইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে মৃত্যুবরণ করছি। আমার মৃত্যুর জন্য আমার পরিবার কিংবা অন্য কোন ব্যক্তিও দায়ী নন। এবং আমি কোন প্রকার মানসিক চাপ ছাড়া মৃত্যুবরণ করতেছি নিজ ইচ্ছায়।’

স্ট্যাটাসে নোমান আরও উল্লেখ করেছেন, ‘হাসনাত আরা রিম্পা আমার বিবাহিত বউ। আমরা ৩০.০৯.২০১৮ রাত ১১টা ২৫ মিনিটে বিয়ে করি। ও নিজের ইচ্ছায় বাসা থেকে বের হয়, আমি গিয়ে নিয়ে আসি সিএনজি করে। রিম্পাকে ওর পরিবার আগে থেকে মারধর করতো। যার জন্য সে আগেও সুইসাইড করতে চেয়েছিল, তখন তার আপু টুম্পা তাকে বাঁচায়। এটা ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর এর ঘটনা, সে ঐ দিন আমাকে একটা সুইসাইড নোট দিছে।’

এর আগেও রিম্পাকে তিনবার মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়েছে উল্লেখ করে নোমান লিখেছেন, যার দুইটা প্রেসক্রিপশন টুম্পা ওর বোনের কাছে আছে। আর একটা আমার কাছে রয়েছে। ওকে মরে যাওয়ার জন্য ওর বোন অনেকবার বলছে ফোনে। আমাদের বিয়ের পর প্রায় সবসময় ওর বোন আমাদের ফোন দিয়ে নানা খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতো।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর ছাগলাইয়া পৌরসভার বাঁশপাড়া এলাকার আবুল বাশার হেডমাষ্টার বাড়ির সৌদি প্রবাসী শাহ আলমের মেয়ে হাসনাত আরা রিম্পার সাথে প্রেমের সূত্র ধরে পার্শ্ববর্তী নিজকুঞ্জরা গ্রামের মো. নোমানের বিয়ে হয়।

&dquote;&dquote;

রিম্পা সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের অনার্স এর শিক্ষার্থী ছিলো। বিয়েটি মেয়ের পরিবার মেনে না নিলেও স্বামীর পরিবার একপর্যায়ে মেনে নিয়ে এক সপ্তাহ পর তাদের বাসায় তোলে। তবে এনিয়ে মা-বোনদের সাথে রিম্পার মনোমালিন্য চলছিল।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিম্পার লাশ ঝুলতে দেখে তার শাশুড়ি আফরোজা বেগম চিৎকার করলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিম্পার শাশুড়িকে আটক করা হয়। ঘটনার পর থেকে স্বামী নোমান ও শশুর পলাতক রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: